যুব মূর্তি স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বাস করতেন গীতা পড়ার চেয়ে ফুটবল খেলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি প্রায়ই শুধু মানসিকভাবে নয়, শারীরিকভাবেও শক্তিশালী হওয়ার কথা বলতেন।
ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে বিশ্বের প্রথম প্রেরণাদায়ক বক্তা হিসাবে মনে করা হয়, যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনকে গীতার বিষয়ে জ্ঞান দিয়ে যুদ্ধে জয়ী করিয়েছিলেন। হাজার হাজার অনুপ্রেরণামূলক বক্তা জীবনে অনুপ্রাণিত হতে এবং সফল হওয়ার জন্য গীতা পড়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু যুব মূর্তি স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বাস করতেন গীতা পড়ার চেয়ে ফুটবল খেলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি প্রায়ই শুধু মানসিকভাবে নয়, শারীরিকভাবেও শক্তিশালী হওয়ার কথা বলতেন।
একটি সুস্থ মন শুধুমাত্র একটি সুস্থ শরীরে বাস করে। স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বাস করতেন যে জীবনে সাফল্যের পাশাপাশি অর্থও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি চেয়েছিলেন ভারতের তরুণরা তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হোক। কিন্তু গীতা পড়ার চেয়ে ফুটবল খেলার ওপর জোর কেন?
১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী এবং দেশে এদিন জাতীয় যুব দিবস হিসাবে উদযাপন করা হয়। তাহলে চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক, কেন তিনি গীতা পড়ার চেয়ে ফুটবল খেলা পছন্দ করতেন।স্বামী বিবেকানন্দ যুবকদের বলতেন, “গীতা পড়ার চেয়ে ফুটবল খেলে স্বর্গের কাছাকাছি যাওয়া যায়। আমি যা বলব তা তামাদের অবাক করবে। তুমি শক্তিশালী হলে তবেই গীতা বুঝতে সক্ষম হবে।"
তিনি বলেছিলেন যে শুধুমাত্র তাদের পেশী শক্তিশালী করার মাধ্যমে যুবকরা গীতাকে আরও ভালভাবে বুঝতে সক্ষম হবে। কেবল শক্তিশালী হওয়ার মাধ্যমেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতিভা এবং শক্তিকে আরও ভালভাবে বোঝা যায়। উপনিষদ বোঝার জন্য, আপনার শরীরের জন্য আপনার পায়ে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানো গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্ব একটি অনুশীলন ক্ষেত্র, এখানে নিজেকে শক্তিশালী করুন
স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন, “আত্মার পক্ষে কোনও কিছুই অসম্ভব বলে মনে করবেন না। এভাবে চিন্তা করা হবে সবচেয়ে বড় ধর্মদ্রোহিতা। যদি কোনও পাপ থেকে থাকে, তাহলে বলতে হবে আপনি দুর্বল বা অন্যরা দুর্বল। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, এই পৃথিবী একটি ব্যায়ামাগার, যেখানে আমরা নিজেদেরকে শক্তিশালী করতে এসেছি।
তিনি বলেছিলেন, “আমাদের চিন্তা আমাদের তৈরি করেছে, তাই আপনি কী ভাবছেন সে সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। শব্দগুলি গৌণ, চিন্তা রয়ে গেলেও সেগুলি বহুদূর যায়। আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে পারবেন না যতক্ষণ না আপনি নিজেকে বিশ্বাস করেন।"
আপনার শরীর একটি অস্ত্র
স্বামী বিবেকানন্দও মনের নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, মনকে নিয়ন্ত্রণ করা একদিনের কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ও নিয়মতান্ত্রিক সাধনা। মনকে নিয়ন্ত্রিত করলে মনে হয় যেন ভগবান প্রাপ্তি হয়েছে। তিনি বলতেন, “আপনার শরীর একটি অস্ত্র এবং আপনার এটিকে আরও শক্তিশালী করার কথা মনে করা উচিত। শুধু আপনার মন এবং শরীরকে শক্তিশালী করার কথা ভাবুন, এর সঙ্গে আপনি জীবন সাগর পাড়ি দিতে সক্ষম হবেন। নিজের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস আপনাকে ধার্মিক করে তুলবে। এতে আপনি খুব খুশি হবেন এবং আপনার মন নিয়ন্ত্রিত থাকবে।