ধোনি-যুবি বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার কারণ কী? কে তাঁদের কানে বিষ ঢেলেছিল?
জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়ার পর যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায়। বন্ধু থেকে শত্রুতে পরিণত হন যুবরাজ-ধোনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও, আইপিএল-এ খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন চেন্নাই সুপার কিংসের কিংবদন্তি মহেন্দ্র সিং ধোনি। তিনি আগামী আইপিএল-এও খেলবেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ভালোভাবে হয়নি, তবে পরবর্তীকালে নজর কেড়ে নেন
ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন মহেন্দ্র সিং ধোনি। দীর্ঘ চুল রেখে একজন সাধারণ উইকেটরক্ষক হিসেবে ভারতীয় দলে যোগদান করেন। প্রথমদিকে কিছু ম্যাচে সুযোগ পাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। এরপরে অসাধারণ খেলে নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং আজ বিশ্ব তাকে নায়ক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ভারতীয় দলের অধিনায়ক হয়ে ৩ বার আইসিসি টুর্নামেন্ট জিতেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি
ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা, বুদ্ধিমত্তা, ডিআরএস নেওয়ার পদ্ধতি, খেলোয়াড়দের পরিচালনা, ফিল্ডিং সেটআপ, বোলারদের পরিবর্তনের মতো ক্রিকেট দক্ষতার মাধ্যমে ভারতীয় দলকে একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ধোনি আইপিএলে নেতৃত্ব দিয়ে চেন্নাই সুপার কিংস দলকে ৫ বার ট্রফি জেতান।
আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে বিপক্ষ দলের বোলারদের কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি
ধোনি যখন ব্যাট করতে নামতেন, তখন প্রতিপক্ষের বোলারদের মনে ভয় কাজ করত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচে কম বলে অর্ধশতরান হাঁকিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাকে হার মানতে বাধ্য করেছিলেন।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের দুই অন্যতম সেরা তারকা মহেন্দ্র সিং ধোনি ও যুবরাজ সিং
একদিকে ধোনি, অন্যদিকে ক্রিকেটে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুবরাজ সিং। অনেক ম্যাচে ধোনি ও যুবরাজ একসাথে দলকে জয় এনে দিয়েছেন। ২০১১ সালের একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে যুবি ও ধোনি একসঙ্গে ভারতীয় দলকে জয় এনে দেন।
২০০৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একদিনের সিরিজে যুবরাজ সিং 'ম্যান অফ দ্য সিরিজ' নির্বাচিত হন এবং তাঁকে একটি বাইক উপহার দেওয়া হয়। যুবরাজ ও ধোনি সেই বাইক নিয়ে মাঠে ঘুরে বেরিয়েছিলেন। ধোনি সেই বাইক চালিয়েছিলেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনি ও যুবরাজ সিংয়ের বন্ধুত্ব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে
সেই সময় তাঁরা দুজনেই ভালো বন্ধু ছিলেন। কিন্তু কিছু কারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। তখন থেকে ধোনি এবং যুবির মধ্যে সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে তাঁরা প্রায় কথা বলা বন্ধ করে দেন।
২০০৭ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপ জেতে ভারত
২০০৭ সালে ধোনির নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফি জয় করে। এর ঠিক পরের বছর অর্থাৎ ২০০৮ সালে ধোনিকে তিন ফর্ম্যাটেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
ক্রিকেট মহলে খবর, মহেন্দ্র সিং ধোনি অধিনায়ক হতেই তাঁর সঙ্গে যুবরাজ সিংয়ের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়
এটি যুবি এবং ধোনির মধ্যে কিছুটা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল বলে জানা গেছে। কারণ ধোনির আগে যুবরাজ সিং টিম ইন্ডিয়ার একজন গুরুত্বপূর্ণ অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তবুও যুবিকে বাদ দিয়ে ধোনিকে অধিনায়ক করে বিসিসিআই।
২০১৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে যুবরাজ সিংয়ের মন্থর ব্যাটিংয়ের সমালোচনা
এরপর ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে যুবরাজ সিং ধীরগতিতে ব্যাটিং করেন। ফলে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে ভারত রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকে। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় যুবরাজকে।
ভালো পারফরম্যান্স দেখালেও ২০১৫ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে জায়গা পাননি যুবরাজ সিং
এরপর ২০১৫ সালের একদিনের বিশ্বকাপের আগে যুবরাজ সিং ধারাবাহিকভাবে শতরান করলেও, ধোনির নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়ার ১৫ জনের চূড়ান্ত দলে যুবিকে স্থান দেওয়া হয়নি। এই কারণেই যুবি এবং ধোনির মধ্যে মনোমালিন্য আরও বেড়ে যায় বলে বলা হয়।
প্রায়ই মহেন্দ্র সিং ধোনিকে আক্রমণ করেন যুবরাজ সিংয়ের বাবা যোগরাজ সিং
যুবরাজ সিংয়ের বাবা যোগরাজ সিং সুযোগ পেলেই ধোনির সমালোচনা করতেন। কিন্তু ধোনি এখনও পর্যন্ত যুবি এবং তাঁর বাবার সমালোচনার কোনও জবাব দেননি।