গত এক দশকে অলিম্পিক্স, এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমসের মতো প্রতিযোগিতায় দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন ভারতের বক্সাররা। বিশেষ করে মহিলা বক্সাররা দারুণ সাফল্য পাচ্ছেন।
মহিলাদের বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে দুর্দান্ত সাফল্য ভারতের। ফাইনালে পৌঁছে গেলেন নিখাত জারিন, লাভলিনা বর্গোহাইন, নিতু ঘানঘাস ও সয়েতি বরা। ৫০ কেজি বিভাগের সেমি ফাইনালে অসাধারণ লড়াই করে রিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী কলম্বিয়ার বক্সার ইনগ্রিত ভ্যালেন্সিয়াকে ৫-০ উড়িয়ে দেন নিখাত। ৪৮ কেজি বিভাগের সেমি ফাইনালে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাজাকস্তানের বক্সার আলুয়া বলকিবেকোভাকে ৫-২ উড়িয়ে দেন নিতু। বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে দু'বারের ব্রোঞ্জজয়ী লাভলিনা ৭৫ কেজি বিভাগের সেমি ফাইনালে হারিয়ে দিয়েছেন চিনের বক্সার লি কিয়ানকে। লাভলিনার পক্ষে ফল ৪-১। ৮১ কেজি বিভাগের সেমি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার স্যু-এমা গ্রিনট্রিকে ৪-৩ ফলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছেন সয়েতি। একসঙ্গে ৪ ভারতীয় বক্সার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত দেশের ক্রীড়ামহল। আগামী বছর প্যারিস অলিম্পিক্সের আগে দেশের মহিলা বক্সারদের ফর্ম আশা জাগাচ্ছে। অলিম্পিক্সে লাভলিনা, নিখাতদের কাছ থেকে পদকের আশায় দেশ।
এর আগে বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৫২ কেজি বিভাগে সোনা জেতেন নিখাত। তিনি এবার ৫০ কেজি বিভাগে লড়াই করছেন। এই প্রতিযোগিতায় দুর্দান্ত ফর্মে এই বক্সার। সেমি ফাইনালেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে তিনি ফাইনালে পৌঁছে গেলেন। ফাইনালেও ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী নিখাত। ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ ভিয়েতনামের এনগুয়েন থি টাম। দু'বারের এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন টাম। তবে তাঁর বিরুদ্ধে জয়ের আশাই করছেন নিখাত। সেমি ফাইনালে জয় পাওয়ার পর এই ভারতীয় বক্সার বলেছেন, 'আমি সেমি ফাইনালে সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পেরেছি। আমি টেকনিক্যাল বক্সারদের মুখোমুখি হলেই ভালো খেলি। আমি এর আগেও ভ্যালেন্সিয়ার বিরুদ্ধে খেলেছি। ও অভিজ্ঞ বক্সার। আমি ওর বিরুদ্ধে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে জয় পেলাম।' টোকিও অলিম্পিক্সে এমসি মেরি কমকে হারিয়ে দেন ভ্যালেন্সিয়া। তাঁর বিরুদ্ধে ভালোভাবে তৈরি হয়ে লড়াইয়ে নেমে জয় পেলেন নিখাত। তিনি মেরি কমের হয়ে বদলা নিলেন।
এর আগে ইস্তানবুলে বলকিবেকোভার কাছে হেরে যান নিতু। তবে সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তিনি তৈরি হয়ে লড়াইয়ে নামেন। দুর্দান্ত লড়াই করে সেই হারের বদলা নিলেন নিতু। সেমি ফাইনালে জয় পাওয়ার পর নিতু বলেছেন, ‘আমি গতবার দূর থেকে লড়াই করছিলাম। তার ফলে পিছিয়ে পড়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারিনি। এবার ওর শরীরের কাছাকাছি থেকে লড়াই করছিলাম। আমাকে মানসিকভাবে তৈরি হতে হয়েছে। আমি অনেক উন্নতি করেছি। অতীতে আমি দূর থেকে কাউন্টার-অ্যাটাক নির্ভর খেলতাম। কিন্তু এখন আমি পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে সেই অনুযায়ী খেলছি।’
আরও পড়ুন-
ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি, পিটি ঊষাকে সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি
দেশের প্রথম মহিলা খেলোয়াড় হিসেবে বিরল সম্মান, রানি রামপালের নামে হকি স্টেডিয়াম
জাতীয় মহিলা টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়ন শ্রীজা আকুলার সঙ্গে, টেবল টেনিসের টক্কর কিরেন রিজিজুর