১৯৫৪ সালের কুম্ভের ভয়াবহ দৃশ্য আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে। সেই মুহূর্ত প্রত্যক্ষকারীরা মন থেকে মুছে ফেলতে পারেন না। আসুন জেনে নেই ১৯৫৪ সালের মহাকুম্ভে কী ঘটেছিল যার ফলে হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
ইউপি। প্রয়াগরাজে বর্তমানে মহাকুম্ভের আয়োজন করা হয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে মানুষ এতে অংশগ্রহণ করতে আসছেন, কিন্তু ১৯৫৪ সালের কুম্ভের ভয়াবহ দৃশ্য আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে। সেই মুহূর্ত প্রত্যক্ষকারীরা মন থেকে মুছে ফেলতে পারেন না। ভিড়ের মধ্যে পদদলিত হয়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। অনেকে বস্ত্রহীন অবস্থায় ঘরে ফিরেছিলেন।
১৯৫৪ সালে দেশের স্বাধীনতার পর প্রথম কুম্ভমেলা আয়োজন করা হয়েছিল। মৌনী অমাবস্যায় সঙ্গমস্নানের জন্য অনেক মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। তখন প্রয়াগরাজ ইলাহাবাদ নামে পরিচিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর আগমনে তাকে দেখার জন্য ভিড় জমেছিল। এর ফলে ভয়াবহ হুড়োহুড়ি শুরু হয়। প্রাণ বাঁচাতে মানুষ ছুটোছুটি করছিল। প্রাণ বাঁচাতে মানুষ বিদ্যুতের খুঁটিতে চড়ে তারের সাথে ঝুলে পড়ে। এই হুড়োহুড়িতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। ইউপি সরকার বলেছিল এটি কোন দুর্ঘটনা নয়, কিন্তু একজন ছবি তোলার কারিগর চুপিচুপি ছবি তুলে নিয়েছিলেন। পরের দিন এই ছবি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। এতে রাজনৈতিক হুলস্থুল শুরু হয়। ৬৫ বছর পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনার জন্য জওহরলাল নেহেরুকে দায়ী করেছিলেন।
কুম্ভে ৪০ থেকে ৫০ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করতে পৌঁছেছিলেন। রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের সাথে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুও কুম্ভে পৌঁছেছিলেন। তখনও প্রথম কুম্ভ নিয়ে জোরদার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার কুম্ভে বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হয়েছিল। ৯টি হাসপাতালও তৈরি করা হয়েছিল, যাতে কেউ অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পেতে পারেন। অনেক মানুষ ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বস্ত্রহীন অবস্থায় ঘরে ফিরেছিলেন। কেউ মহুয়ার পাতা কমরে বেঁধে ঘরে ফিরেছিলেন, কেউ বা ছিঁড়ে পুরানো কাপড় পরেছিলেন। তিন দিন পরে রেডিওতে শোনা গেল কুম্ভের হুড়োহুড়িতে হাজার হাজার শ্রদ্ধালুর মৃত্যু হয়েছে।