সামনেই দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে ফের একবার জিতে আমেরিকার মসনদে বসতে বদ্ধ পরিকর ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই মার্কিন কর্মীদের কাজ সুনিশ্চিত করতেই ইমিগ্রেশন ও নন ইমিগ্র্যান্ট ওয়ার্কার ভিসায় নিষেধাজ্ঞা ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত লাগু করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। চলতি বছরের জুনেই এইচ-১বি ভিসা স্থগিতের ঘোষণা করেছিল মার্কিন সরকার। গত সপ্তাহেই তার এগজিকিউটিভ অর্ডারে সই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কিন্তু শেষপর্যন্ত এই ভিসার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করল আমেরিকা।
এইচ-১বি ভিসা নিয়ে যাঁরা লকডাউনের আগে মার্কিন মুলুকে কাজ করতেন, সেই একই জায়গায় কাজের জন্য ফিরতে চাইলে তাঁদের বাধা দেওয়া হবে না, সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। নয়া নির্দেশিকায় আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, বিদেশি নাগরিক কর্মীরা যাঁরা একই কাজে যোগ দিতে মার্কিন মুলুকে ফিরতে চান, তাঁদের জন্য এইচ-১ বি ভিসার বেশকিছু নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। নিয়ম শিথিল করার মধ্যে দিয়ে কর্মীদের স্ত্রী/স্বামীকেও আমেরিকায় ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই নয়া নির্দেশের ফলে ভারতীয় তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার কর্মীরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত হলেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি এগজিকিউটিভ অর্ডারে সই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে মার্কিন ফেডেরাল এজেন্সিগুলি এইচ-১ বি ভিসায় আমেরিকায় থাকা বিদেশি নাগরিকদের কাজে বহাল করতে পারছিল না। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক, অ্যামাজন-সহ বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন সংস্থাগুলি। মামলা দায়ের করে সংস্থাগুলি দাবি করেছিল, ট্রাম্প সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকার বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ট্রাম্পের ভিসানীতি নিয়ে মুখ খোলেন অ্যালফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই, তিনি জানিয়েছিলেন, 'আমেরিকার অর্থনৈতিক সাফল্যের অনেকটা কৃতিত্বই যায় অভিবাসনের উপর। তার জন্যই বিশ্বের প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে আমেরিকা আর সে জন্যই গুগল আজ এই জায়গায়।' একই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্যুইটারও। ই-কমার্স জায়েন্ট অ্যামাজনও এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিল। এ ছাড়াও সিলিকন ভ্যালির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি অ্যাপল, ফেসবুক, এইচপি, ওরাকল ও সেলফোর্সের হাই প্রোফাইল লবি গ্রুপ দ্য ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি কাউন্সিল বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, 'আমেরিকার অর্থনীতির সংকটময় পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্তের মারাত্মক প্রভাব পড়বে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও আসন্ন বছরের আর্থিক বৃদ্ধিতে।'
আরও পড়ুন: ইমারানের ওপর বেজায় ক্ষেপেছে সৌদি, তেল তো দূর এবার ঋণও পাবে না পাকিস্তান
তারপরেও ট্রাম্প প্রশাসন এইচ-১ বি ভিসা সহ অন্যান্য বিদেশি কর্মী ভিসা সাসপেন্ড করেছিল। আমেরিকায় এই নির্বাচনের বছরে সেখানকার কাজের বাজার শুধুমাত্র মার্কিনীদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে এই পদক্ষেপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চাপে পরেই এবার এইচ-১ বি ভিসার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করল আমেরিকা।