আবারও দলাই লামাকে নিয়ে চিন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দঁড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গেছে। মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেস একটি নতুন বিল পাশ করেছে, সেখানে বলা হয়েছে দলাই লামার উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার জন্য তিব্বতীদের অধিকার পুণঃপ্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি তিব্বতে মার্কিন দূতাবাস তৈরির কথাও বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তিব্বতের পরিবেশ রক্ষা করার কথাও বলা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি চিন তিব্বত থেকে ইতিমধ্যেই কয়েক ঘনমিটার জল অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। আগামী দিনে আরও জল সরিয়ে ফেরার কর্মসূচি রয়েছে বেজিং-এর। চিন আগেই নির্বাসিত ধর্মগুরু দলাই লামাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তারপরেই দলাই লামার প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
চিনা পররাষ্ট্র মন্ত্রক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তিব্বত সংক্রান্ত আইন পাশ করা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়েছিল। ওয়াং বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষতি করবে। আমেরিকারে চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ বন্ধ করারও কথাও বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। চিন মার্কিন কংগ্রেসের পাশ হওয়া তিব্বতি নীতি ও সমর্থন আইন ২০২০ তীব্র সমালোচনা করেছে। অন্যদিকে সেনেটের অনুমোদনের পর একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে চিনা সরকারি কর্মকর্তাদের যেকোনও হস্তক্ষেপ ও গুরুতর নিষেধাজ্ঞা কোনও কিছুকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বতো ভাবে তিব্বতীদের পাশে দাঁড়াবে।
বড়দিনে কৃষকদের নগদে সাহায্য, সেই সঙ্গে পাশে থাকার বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী ...
বছর শেষে বিশ্বের শেষতম মহাদেশেও করোনারভাইরাসের হানা, উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের ...
পাল্টা তিব্বতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দলাই লামার উত্তরসূরি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় ধর্মগুরুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। সেন্ট্রাল তিব্বত প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, গত দুবছর এই বিষয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। অবশেষে তাঁরা সাফল্যের মুখ দেখেছেন। গোটা বিষয়টিতে তিব্বতি স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় হিসেবে দেখা হয়েছে। একই সঙ্গে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের এই পদক্ষেপটি দলাই লামার উত্তরাধিকার বেছে নেওয়া ও তিব্বতের বাসিন্দাদের সাহস ও সংহতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অন্যদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার মার্কিন নতুন বিলে চিন সরকার যাতে দলাই লামার সঙ্গে কথা বলে তারজন্য একটি প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।
চিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ১৯৫৯ দলাই লামা জীবন হাতে করে অরুণাচল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন। আর সেই কারণেই বেজিং-এর চক্ষুশূল হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। দলাই লামার অনুসারীরাও হিমাচল ও অরুণাচল প্রদেশ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। বর্তমানে ভারতে ৮০ হাজারেরও বেশি তিব্বতিদের বাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলিতে দেড়লক্ষ তিব্বতি ছড়িয়ে ছটিয়ে রয়েছেন।