জেআরডি টাটা। পুরো নাম জেহাঙ্গির রতনজি দাদাভয় টাটা। ব্রিটিশদের মুখের উপরে তাঁদের জাত্যাভিমা এক কড়া থাপ্পড় কষিয়েছিলেন তিনি। ভারতের বুকে আজ যে টাটা গোষ্ঠী এক সুমহান ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে তাঁদের নেতৃত্বাধীন ব্যবসার- তার সূচনাটা হয়েছিল জেআরডি টাটার হাত ধরে। বলতে গেলে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জেআরডি-র উত্থান ছিল স্বদেশিয়ানার এক ঢঙ্কানিনাদ।
তাঁর রক্তে ভারতীয় পার্সিদের জেদ ও ঐশ্বয্যের প্রাচুর্য ছিল। কিন্তু, তাঁর জন্ম থেকে পড়়াশোনা এবং বেড়ে ওঠার বেশিরভাগটাই বিদেশে, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। বাবা রতনজি দাদাভয় টাটা। আর মা ছিলেন ফরাসী কন্যা। নাম সুজানে বিঁয়রে। কিন্তু এতে তাঁর মনের মধ্যে থাকা ভারতীয়ত্বে কোনও ছাপ পড়েনি। কারণ জেহাঙ্গির রতনজি দাদাভয় টাটার শিকড়টা যে ছিল ভারতের মাটিতেই। তাই ফিরে এসেছিলেন নিজের দেশে, নিজের লোকেদের মাঝে। আর বিদেশে এক মুক্ত চিন্তায় বড় হয়ে ওঠা জেহাঙ্গির রতনজি দাদাভয় টাটা-র অকুতভয় ছিল ব্রিটিশদের মুখের উপর কড়া থাপ্পড়। দেশজুড়ে সেই সময় স্বদেশিয়ানার ভাব এবং ইংরেজ ভারত ছাড়োর স্লোগান আরও মজবুত হচ্ছিল। মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে তাবড় তাবড় আন্দোলনকারী ডাক দিচ্ছিলেন স্বদেশি জিনিস গ্রহণ ও বিদেশি জিনিস বর্জনের জন্য। এমনই এক সময়ে জেহাঙ্গির তাঁর ব্যক্তিগত বিমানের উড়ান ভরেছিলেন করাচি থেকে মাদ্রাজ বর্তমানে চেন্নাই পর্যন্ত। জেআরডি-র বয়স তখন মাত্র ২৮ বছর। এর আগে ব্রিটিশ বারবারই ভারতীয়দের সামনে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে বিমান ওড়ানোর ক্ষমতা শুধুমাত্র সাদা চামড়ার লোকেদের কাছেই রয়েছে। জেআরডি টাটা-র বিমান চালানোটা শুধু তাঁকে প্রথম ভারতীয় লাইসেন্সড পাইলটেরই মর্যাদা দেয়নি সেই সঙ্গে এটা ছিল ব্রিটিশদের গালে একটা কড়া থাপ্পড়।