'আজ আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এক মহাপূণ্যের কাজ। যেভাবে আপনার দেশের সেবা করেছেন, মাতৃভূমিকে পরাক্রমের হাত থেকে রক্ষা করেছেন তাতে আপনাদেরকে আমার প্রণাম। এমনকী আপনাদের জন্মদাত্রী বীরমাতা-কেও আমি প্রণাম জানাই।' এক আবেগঘন ভাষণে এভাবেই গালওয়ানে জখম জওয়ানদের মন জয় করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী যে লাদাখ যাচ্ছেন তা কেউ ঘূণাক্ষরেও জানতে পারেনি। বরং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর লাদাখ সফরের কথা ছিল। কিন্তু, বৃহস্পতিবারই তা পিছিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার ভোরের মধ্যে লাদাখের নিমুর এলাকায় পৌঁছে যান। সেখান থেলে এলএসি- মানে লাইন অফ অ্যাক্চুয়াল কন্ট্রোলের দূরন্ত কয়েক কিলোমিটার। নিমুর সেনা বেসে প্রধানমন্ত্রী সমস্ত বিভাগের সেনা জওয়ানদের সঙ্গে সাক্ষার করেন। সেখানে রীতিমতো ব্ল্যাকবোর্ডে আঁকা মানচিত্র ধরে প্রধানমন্ত্রীকে এলএসি-র স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টগুলো বোঝানো হয়। চিন কীভাবে এলএসি ধরে ভারতের সঙ্গে পিঠ ঘেঁষাঘেষি করে রয়েছে তাও বোঝানো হয় প্রধানমন্ত্রী। এমনকী গালওয়ান ভ্যালিতে চিনা ফৌজের হামলার দিন- ঠিক কীভাবে চিনা সেনাদের অনুপ্রবেশ কোন দিক দিয়ে ঘটেছিল এবং কীভাবে ভারতীয় সেনাদের উপরে হামলা হয়েছিল তাও বোঝানো হয়। ভারতীয় সেনা জওয়ান গালওয়ান ভ্যালির এই স্ট্র্যাটিজিক পয়েন্টে কীভাবে সংখ্যায় কম থেকেও চিনে লাল ফৌজকে প্রতিহত করেছে তাও খাতায়-কলমে প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হয়।
প্রতিটি জওয়ানের সঙ্গেই করমর্দন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরই মাঝে এলএসি-র স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টগুলোও দেখে নেন তিনি। পরে সেনা জওয়ানদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং যেভাবে তাঁরা শত্রুর মাঝা ভেঙে দিয়েছেন তা এক নতুন বীরগাথা তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করেন। এমনকী বিশ্বের কাছে বিহার রেজিমেন্ট এখন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহসিকতার এক আইকন বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। লেহ-র সেনা হাসপাতালে ভর্তি জখম জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের আশ্বস্ত করেন তিনি। জখম জওয়ানদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা শেষ হতেই সকলে ভারত মাতার নামে জয়ধ্বনিও দেন।