২৪ ঘণ্টায় ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি জোধপুরে, প্লাবিত একাধিক স্থান। পুরো এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, জলবন্দি মানুষ। বহুস্থানে রাস্তার উপরে বইছে স্রোত, ভেসে যাচ্ছে গাড়ি। এই অবস্থায় আন্ডারপাসে চালক-সহ ডুবে গেল মারুতি গাড়ি। স্থানীয় যুবকরা সাহসের সঙ্গে গাড়ির পিছনের দরজা খোলে। সেই পিছনের দরজা দিয়ে চালককে বের করে আনে তারা।
আন্ডারপাস দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল গাড়িটি। কিন্তু, হয়নি। উল্টে নৌকার মতো ১৫ ফিট জলে ভাসতে থাকে গাড়িটি। এদিকে, গাড়ির ইঞ্জিন দিয়ে হুঁড়হুড় করে তখন জল ঢুকছে ভিতরে। গাড়িটা গোত্তা খেতে খেতে ডুবন্ত টাইটানিক জাহাজের মতো খাড়া হয়ে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে জলের নিচে চলে যাচ্ছিল গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে বসে থাকা চালকের চেহারাটা। এক হাত স্টিয়ারিং ধরে, আর অন্য হাতে গাড়ির বন্ধ জানলার কাচে সমানে থাপ্পড় মেরে যাচ্ছে। কিংকর্তব্য বিমৃঢ় অবস্থা সেখানে উপস্থিত অধিকাংশ মানুষের। কারণ আর একটু ক্ষণ পরেই গাড়িটি সোসা ১৫ ফিট জলের তলা চলে যাবে। চালক যদি বেরিয়ে আসতে না পারে তাহলে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত। আচমকাই আন্ডারপাসের উপরের ব্রিজ থেকে গভীর জলে ঝাঁপ এক যুবকের। সাঁতরে একটি লোহার বিম ধরা গাড়িটির পিছনের বনেটে চেপে বসল সে। এতে গাড়়ির সামনের দিকের ডুবতে অংশ কিছুটা জলের উপরে এল। ওই যুবককে দেখে এগিয়ে গেল আরও দুই জন। এদের মধ্যে একজন নিচ থেকে গাড়িটিকে জলের উপরে ভাসিয়ে রাখার চেষ্টা করছিল। জলের দাপটে তখন গাড়ির সামনের দরজা জ্যাম হয়ে গিয়েছে। কিছুতেই দরজা খুলতে পারছিলেন না তিন যুবক। মনে হচ্ছিল জোধপুরের ভীষণরকমের এই বৃষ্টির জমা জলে হয়তো সত্যি সত্যি সলিল সমাধি ঘটতে চলেছে চালকের। কিন্তু আচমকাই যেন মিরাক্যল। ব্রিজের উপর থেকে জলে ঝাঁপ দেওয়া যুবক তখন এক ঝটকায় খুলে ফেলেছে গাড়ির পিছনের দরজা। এদিকে, জল খুলতেই গাড়ির ভিতরে হুড় হুড় করে জল ঢুকতে শুরু করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়়ি জলের তলায়। সব আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ দেখা গেল যুবকদের হাত ধরে জলের উপরে ভেসে উঠল চালক। তখন সকলেই যুবকদের জন্য হাততালি দিচ্ছে। আতঙ্কে চোখমুখ প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার জোগার চালকের। এক অবিশ্বাস্য উদ্ধারে প্রাণটা ফিরে পেয়েছেন ভাবতেই পারছিলেন না।