ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা সমীর মণ্ডল এবং তাঁর বোন ভারতী বিশ্বাস জানান, অসুস্থ বাবাকে তারা শনিবার এপেক্স নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। রবিবার ভিজিটিং আওয়ারে এসে দেখেন বাবা-র বিছানা এবং চাদের ভিজে চপচপ করছে। কর্তব্যরত নার্সকে নাকি তাঁরা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে চান। সমীর ও ভারতী-র অভিযোগ- ওই নার্স তাঁদের কথা তো শুনতে চায়নি, উল্টে দুর্ব্যবহার শুরু করে। সমীরের অভিযোগ তিনি এর প্রতিবাদ করতেই রে-রে করে তেড়ে আসে একজন চিকিৎসক। অভিযোগ, ওই চিকিৎসক ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সমীরকে তিন-তলা থেকে নিচে নামিয়ে আসে। এরপর একটি ঘরে সমীরকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে নার্সিংহোমের এক কর্তা উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি সমীরের বোন ভারতীর। ওই কর্তা এরপর অশ্রাব্য ভাষায় তাঁদের হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। এমনকী, সেখানে উপস্থিত চিকিৎসকরাও তীব্রভাবে চিৎকার করে তাঁদের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ সমীর ও ভারতীর।
সমীর ও ভারতীর অভিযোগ, ওই ঘরের মধ্যেই চিকিৎসকরা মিলে তাদের মারধর করে। দাদা-কে মার খেতে দেখে বাইরে বেরিয়ে গিয়ে সাহায্যের জন্যা কাকুতি-মিনতি করতে থাকেন ভারতী। ওই দুই ভাই-বোনের অভিযোগ, পুলিশ ডেকে তাঁদের গ্রেফতার করানোরও হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক সমীর এরপর এপেক্স নার্সিংহোম এলাকার তৃণমূল নেতাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এরপরই বিশাল লোকজন হাজির হয়ে যায় এপেক্স নার্সিংহোমের সামনে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বেহালা থানার পুলিশ। তারা উত্তেজিত জনতাকে আটকানোর চেষ্টাও করে।
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, উত্তেজিত জনতার হাতে আক্রান্ত হন তাদের চিকিৎসক এবং কর্মীরা। বচসা ও ধস্তাধস্তিতে পুলিশের সামনেই নিগৃহীত হন নার্সিংহোমের দুই চিকিৎসক। যাদের শরীরে অসংখ্যা আঁচড় এবং ফ্র্যাকচারের মতো আঘাত রয়েছে। সুপ্রতীম নামে নার্সিংহোমের এক কর্মী মুখে ও হাতে আঘাত লেগেছে বলেও দাবি করেছেন নার্সিংহোমের মেডিক্যাল ডিরেক্টর বরুণ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, উত্তেজিত জনতা এক চিকিৎসকের গাড়়িতে ভাঙচুর করে তা উল্টে ফেলে দেয়। বরুণ-এর আরও অভিযোগ, খাওয়াতে গিয়ে সামান্য জল পড়ে গিয়েছিল, তার জন্য রোগীর পরিবার যেভাবে চড়াও হয় তা নিন্দনীয়। এমনকী রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে প্রোটোকল ভাঙারও অভিযোগ এনেছে
এই ঘটনার রেশ মেলাতে না মেলাতেই বাইরে বেরিয়ে এসে এপেক্স নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তীব্র চিৎকারে অভিযোগ জানাতে থাকেন এক তরুণী। তাঁর অভিযোগ, দিনের পর দিন নার্সিংহোমের স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহার করা পিপিই কিট, গ্লাভস এবং মাস্ক তাঁদের বাড়ির মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বহুবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
অবশেষে পুলিশের মধ্যস্থতায় বাবা শ্রীদাম মণ্ডলকে নার্সিংহোম থেকে বের করে বাড়ি নিয়ে যান সমীর ও ভারতী। সোমবার এশিয়ানেট নিউজ বাংলার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সমীর অভিযোগ করেন, রবিবার বিকেলে গণ্ডগোলের সময় তাঁর বাবার অক্সিজেন মাস্ক খুলে দিয়েছিল নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এমনকী এই নার্সিংহোমের সঙ্গে পুলিশ ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার, বিশেষ করে ডায়মন্ড হারবার ও তার সংলগ্ন এলাকার অ্যাম্বুল্যান্স চালকদেরও আঁতাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সমীর। তাঁর অভিযোগ, রবিবার রাতে বেহালা থানায় প্রথমে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, ডিউটি অফিসার তাঁকে এপেক্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে জেলে পুরে দেওয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ সমীরের। তাঁর আরও অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা কমিশনের লোভে গ্রামাঞ্চলের রোগীদের নিয়ে এপেক্সে চলে যায়। তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্স চালক এর সুবাদে তিন হাজার টাকা পকেটে পুরেছেন। এই টাকাটা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালককে দিয়েছিল। রবিবার বিকেলে গণ্ডগোলের সময় এই অ্যাম্বুল্যান্স ও নার্সিংহোমের আঁতাতের কথা নাকি জানতে পেরেছিলেন সমীর। তাঁর আইনজীবী আপাতত নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করতে চলেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Apr 11 2024, 11:21 PM IST
Apr 10 2024, 05:58 PM IST
Mar 11 2024, 01:50 PM IST
1 hour ago
Oct 18 2023, 03:29 PM IST
Oct 15 2023, 05:24 PM IST
Jun 26 2023, 04:53 PM IST
Jun 22 2023, 11:13 PM IST
Jun 15 2023, 11:51 AM IST
Apr 14 2024, 04:33 PM IST
Apr 12 2024, 11:08 AM IST
Apr 10 2024, 11:24 PM IST