ভোটপ্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির অস্ত্র আমফান-কাঁটা

  • তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে ঝড় তুলেছে বিজেপি
  • একাধিক ইস্যুকে হাতিয়ার করেছে পদ্ম শিবির
  • যার মধ্যে রয়েছে সিন্ডিকেট, দুর্নীতি ও তোলাবাজি
  • তবে আমফান দুর্নীতি অন্যতম প্রধান হাতিয়ার বিজেপির
     

Asianet News Bangla | Published : Mar 27, 2021 2:20 PM IST

শমিকা মাইতিঃ তোলাবাজি-সিন্ডিকেট-কাটমানির অভিযোগকে ছাপিয়ে আমফান-কাঁটাই এখন সবচেয়ে বেশি বিঁধছে তৃণমূলকে। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে আমফান দুর্নীতিকে অস্ত্র করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি গোসাবায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বলেন, ‘আমফানের পর কেন্দ্র থেকে বাংলাকে ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা ক্ষতিগ্রস্তরা পাননি। ভাইপো অ্যান্ড কোম্পানি সেই টাকা নিয়ে নিয়েছে।’ বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমফান-দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করার জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তৈরি করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

গত বছর ২০ মে সুপার সাইক্লোন আমফানের দাপটে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হুগলি, হাওয়া, নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে, ঘরবাড়ি ভাঙে। সব মিলিয়ে প্রায় ২৮.৬ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে খবর। ৬২৫০ কোটি টাকা ত্রাণের জন্য বরাদ্দ করেন মমতা।  স্থির হয়, পুরো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ২০ হাজার টাকা পাবেন আবেদনকারী আর আংশিক ক্ষতি হলে মিলবে পাঁচ হাজার টাকা। অভিযোগ, ত্রাণের এই টাকা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে পঞ্চায়েত স্তরে।  প্রায় এক বছর কাটতে চললেও আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই বাড়ি তৈরির টাকা এখনও পাননি। কোথাও আবার একই পরিবারের একাধিক সদস্য ত্রাণের টাকা পেয়েছেন। পানের বরজ এবং মৃত গবাদি পশুর ক্ষতিপূরণ নিয়েও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা নিজে বা পরিবারের লোকেদের নাম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় ঢুকিয়ে ত্রাণের টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে রাজ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় মমতা প্রশাসনিক ভাবে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং নতুন করে ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা করতে বলেন। দ্বিতীয় দফায় স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে প্রচুর অনিয়মের তথ্য সামনে আসে। অনায্য ভাবে পাওয়া ত্রাণের টাকা সরকারি তহবিলে ফেরতও দেন বহু মানুষ। 

এদিকে, আমফানের পরে রাজ্য সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে এক হাজার কোটি টাকা ত্রাণ দিয়েছিলেন, তার বণ্টনে দুর্নীতি হয়েছে বলে হাইকোর্টে পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেগুলি একত্রিত করে বিচারের পর হাইকোর্ট জানায়, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে অনিয়ম হয়ে থাকলেও থাকতে পারে। তাই এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ক্ষতিপূরণের টাকা যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছিল, তাই এর তদন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়েই করানো উচিত বলে মনে করেছে হাইকোর্ট। সেই কারণেই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ক্যাগকে। সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েও লাভ না হওয়ায় শেষমেশ আমফানের ত্রাণ বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সিএজি তদন্তে সম্মত হয় নবান্ন। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলি জেলায় গিয়ে সিএজি-র প্রতিনিধিদল খোঁজখবর শুরু করেছে সম্প্রতি। স্বাভাবিক ভাবেই ভোটের প্রাক্কালে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘আমফানের টাকা যারা চুরি করেছে, ক্ষমতায় এসেই বিজেপি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

Share this article
click me!