উত্তম দত্ত :- বাম-কংগ্রেস ও আইএসএফ-এর জোটে এখনও অধরা সমঝোতা। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট সমঝোতা থাকার দাবি করলেও এখনও আসন রফা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতার সন্ধান নেই। বামেরা ৩০টি আসন ইতিমধ্যেই আইএসএফ-কে ছেড়ে দিলেও কংগ্রেস কোনও আসনই দেয়নি। দিন কয়েক আগেই বৈদ্যবাটীতে মহম্মদ সেলিম, প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নানদের সঙ্গে বৈঠক হয় আইএসএফ-এর। সেখানে সিপিএম-এর পক্ষে মহম্মদ সেলিমও দক্ষিণবঙ্গে আসন সমঝোতার দাবি করলেও কংগ্রেসের অবস্থান স্পষ্ট ছিল না। প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং আব্দুল মান্নানরা জানিয়েছিলেন গোটা বাংলা নিয়ে আলোচনা চলছে, সুতরাং এমন আলোচনা আরও হবে। এখানেই স্পষ্ট ছিল যে আইএসএফ-এর দাবি করা আসনগুলিতে রফা না হওয়ারই সম্ভাবনা। কংগ্রেস তাদের পছন্দমতো যে আসনগুলো ছাড়াবে আইএসএফ-কে তা নিতে হবে বলেই প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন, বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার রথ ভাঙচুর মানিকতলায়, কাঠগড়ায় তৃণমূল, দেখুন ভিডিও
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই সাংবাদিক সম্মেলন ডাকে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। সেখানে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী নিজে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, আইএসএফ-এর দাবি ছিল ৭০ থেকে ৮০টি আসন তাদের ছাড়তে হবে। এরপর আলোচনার মাধ্যমে একটা রফাসূত্রে আসা গিয়েছে। বামেরা ৩০টি আসন ছেড়েছে। আরও চার থেকে পাঁচটা আসন তারা ছাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এরপর কংগ্রেস যদি ২৫টা বা তার আশপাশে কোনও সংখ্যক আসন ছাড়ে তাহলে ৭০ সংখ্যার কাছাকাছি থাকা যাবে। কিন্তু যেখানে উত্তরবঙ্গ নিয়ে এখনও কোনও আসন রফাই হল না আইএসএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের- সেখানে তাহলে পুরো রাজ্যে জোট হচ্ছে কী করে? এমন প্রশ্নের উত্তরে আইএসএফ-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে শুধু জোট হবে আর উত্তরবঙ্গে হবে না, এমন কোনও বিষয় নয়। উত্তরবঙ্গ নিয়ে আলোচনা চলছে দাবি করেছে আইএসএফ। তাদের দাবি, বাম ও কংগ্রেসের হাত ধরে আইএসএফ-এর লক্ষ্য এক সুন্দর বাংলা তৈরি করা। যেখানে সব মানুষ নিরাপদে বাস করতে পারবে। আইএসএফ আরও জানিয়েছে, ভোট যাতে ভাগ না হয়ে যায় সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। এই উদ্দেশেই জোটকে আরও সংঘবদ্ধ হওয়া দরকার বলে মনে করছে আইএসএফ।
২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডের সভায় বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে আইএসএফও হাজির থাকবে বলে জানানো হয়েছে। খোদ পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি ব্রিগেডে থাকবেন বলেও জানিয়েছে আইএসএফ। এদিকে, এদিনের এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে আইএসএফ তৃণমূল কংগ্রেসকেও নিশানা করে। তারা জানিয়েছে, ফুরফুরা শরিফকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির কাজে ব্যবহার করে এসেছে। কিন্তু, ফুরফুরা শরিফ কোনওদিনই রাজনৈতিক কোনও অবস্থান নেয়নি। এবার বাংলা সামনে বিপদ। সেই কারণে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বে আইএসএফ তৈরি হয়েছে। মিম-কেও যাতে এই জোটের শরিক করা যায় বা একটা সমঝোতায় আসা যায় তা নিয়েও কথা চলছে বলে জানিয়েছে আইএসএফ। নন্দীগ্রামে সব ঠিক থাকলে আইএসএফ-ই প্রার্থী দেবে বলে জানানো হয়েছে। আর এক্ষেত্রে কোনও পীরজাদাকেই প্রার্থী করার ইঙ্গিত দিয়েছে আইএসএফ।