তাপস দাসঃ ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বহু বাম দুর্গে ফাটল নয়, একেবারে দেওয়াল ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেও যে যে এলাকায় নিজেদের অক্ষত রাখতে পেরেছিল সিপিএম, বাঁকুড়ার তালড্যাংরা তার অন্যতম। ভারতের প্রথম নির্বাচন থেকে ১৯৬৭ সালের ভোট, এই পর্যন্ত, এ আসন ছিল কংগ্রেসের। ১৯৬৯ সালের ভোটে সিপিএম এখানে জেতে। তাদের সেই জয়ের রথ গিয়ে থামে ২০১৬ সালের ভোটে। মাঝে শুধু একবার, বহুনিন্দিত ১৯৭২ সালের নির্বাচনে জিতেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী। এ ছাড়া তালড্যাংরার ভোটাররা লাল ছাড়া আর কোনও রং দেখতে পাননি ব্যালটে বা ইভিএমে।
২০১১ সালের ভোটে এখানে সিপিএম প্রার্থী মনোরঞ্জন পাত্র ৭৪ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়ে জিতেছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস ৬৭ হাজারের মত ভোট পায়। আর বিজেপি পায় মাত্র ৬ হাজারের মত ভোট। ২০১৬ সালে সিপিএমের বাঁকুড়া জেলার দাপুটে নেতা অমিয় পাত্র এখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটবাক্সের ফলে তাঁর দাপট অবশ্য একেবারেই প্রতিফলিত হয়নি। প্রায় ৫০ হাজার ভোট কমে যায় সিপিএমের। অমিয় পাত্রের কপালে সাড়ে ২২ হাজারের কিছু কম ভোট জুটেছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সমীর চক্রবর্তী ৮৩ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। বিজেপির ভোট বাড়ে প্রায় দ্বিগুণ। ১২ হাজারেরও বেশি ভোট গিয়েছিল পদ্ম চিহ্নে।
২০২১ সালের ভোটে ফের মনোরঞ্জন পাত্রকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী। অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন, শ্যামল কুমার সরকার। ২০১৪ সালে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বাইরের লোক বাড়িতে ঢুকলে তাকে কেটে ফেলার কথা বলে বিতর্কের মুখে পডে়ছিলেন। এদিকে তালড্যাংরার বিজেপি প্রার্থীকে শ্যামল সরকারকে নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তাঁকে মানা হবে না বলে পোস্টারও পড়ে এলাকায়। শ্যামল সরকার রানিবাঁধ বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা। সে কারণেই তিনি বহিরাগত বলে অভিযোগ উঠছে। এই পরিস্থিতিতে একদা লাল দুর্গ তালড্যাংরা পুনরুদ্ধার করতে পারবে কিনা তার উত্তর পেতে অপেক্ষা ২ মে-র।