অফিসার সেজে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের বিনিময়ে এক গৃহবধূকে অশালীন প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিভিক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই সিভিক পুলিশকর্মীর নাম ফিরোজ হুসেন। সে মধ্যমগ্রাম থানার অধীনে থাকা ডিআইবি দফতরে কর্মরত। ওই সিভিক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে গৃহবধূ মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
অভিযুক্ত যুবক যে আসলে সিভিক পুলিশকর্মী, তা অভিযোগকারিণী গৃহবধূ এবং তাঁর স্বামীও জানতেন না। ঘটনার সূত্রপাত গত সেপ্টেম্বর মাসে। নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন অভিযোগকারিণী গৃহবধূ এবং তাঁর স্বামী। তাঁর পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে কোনও সমস্যা হয়নি বলেই দাবি গৃহবধূর। কিন্তু তাঁর স্বামীর জন্ম হাওড়ায়, এই যুক্তি দিয়ে ভেরিফিকেশন করার সময় ফিরোজ নামে ওই সিভিক পুলিশ কর্মী আপত্তি জানান বলে অভিযোগ ওই গৃহবধূর। তখন অবশ্য ফিরোজ নিজেই ভেরিফিকেশন অফিসার বলে জানতে ন ওই দম্পতি। গৃহবধূর স্বামীর পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন হতে সময় লাগবে বলেও ফিরোজ ওই দম্পতিকে জানিয়ে দেয়।
গৃহবধূর ফেসবুক পোস্ট।
গৃহবধূর অভিযোগ, একমাস পরেও ভেরিফিকেশন না হওয়া ফের ফিরোজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তখন অফিসার সেজেই তাঁদের বাড়িতে আসে ফিরোজ। এর পরেই তাঁর স্বামীকে জেরক্স করার অছিলায় বাইরে পাঠিয়ে ফিরোজ তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলে অভিযোগ ওই গৃহবধূর। তাঁর দাবি, স্বামীর পাসপোর্ট আটকে যাওয়ার ভয়ে তিনি বিষয়টি তখন কাউকে বলেননি।
আরও পড়ুন- থানায় ঢুকে অফিসারকে মারধর, জেল হেফাজতে তৃণমূল নেতা
গৃহবধূর দাবি, স্বামী ফিরে আসার পরেই চলে যায় ফিরোজ। এর পরে গোটা বিষয়টি নিজের স্বামীকে খুলে বলেন তিনি। অভিযোগ, কিছুক্ষণের মধ্যেই গৃহবধূর হোয়াটসঅ্য়াপে মেসেজ পাঠাতে শুরু করে ওই সিভিক পুলিশকর্মী। শারীরিক সম্পর্ক তৈরির ইঙ্গিত দিয়ে তাঁকে অশালীন মেসেজও পাঠায় ফিরোজ। অভিযোগকারিণীর দাবি, প্রমাণ সংগ্রহের জন্যই তিনি বন্ধুত্বের অছিলায় ফিরোজের সঙ্গে ভাল ভাবে কথা চালিয়ে যেতে থাকেন। আর তাতে উৎসাহিত হয়েই একের পর এক অশালীন বার্তা পাঠাতে থাকে ফিরোজ। ওই সিভিক পুলিশকর্মীর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের সমস্ত স্ক্রিনশটও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন ওই গৃহবধূ।
হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের স্ক্রিনশট।
অভিযোগকারিণী যখন কড়া ভাষায় তার প্রস্তাব খারিজ করে, তখনই বিপদ বুঝে ক্ষমা চাইতে শুরু করে অভিযুক্ত সিভিক পুলিশকর্মী। পরে অভিযুক্ত ওই সিভিক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গৃহবধূ। তখনই তিনি এবং তাঁর স্বামী জানতে পারেন, ফিরোজ আসলে একজন সিভিক পুলিশকর্মী।
হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের স্ক্রিনশট।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, মধ্যমগ্রাম থানার অধীনস্ত ডিআইবি দফতরে একজনই মাত্র পূর্ণ সময়ের অফিসার রয়েছেন। তাঁকে সাহায্য করার জন্য রয়েছেন কয়েকজন সিভিক পুলিশ। তাদের মধ্যেই অন্যতম ফিরোজ। অভিযুক্তের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকায় এখনও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে ফিরোজ। অথচ এফআইআর দায়ের হলেও পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।