হার না মানার গল্প, ২৪ বছর লড়াই শেষে ৯ মাসের জন্য মিলল চাকরি

বামফ্রন্ট আমলে ১৯৯৬ সালে জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে যে প্যানেল তৈরি হয়েছিল তাতে অন্যায়ভাবে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন ওই ১১ জন চাকরীপ্রার্থী। তারা এর প্রতিবাদে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। 

Parna Sengupta | Published : Oct 5, 2021 1:45 PM IST

প্রাথমিক শিক্ষক পদের (Primary Teachers) জন্য নিয়ম মেনেই পরীক্ষা (Examination) দিয়েছিলেন। কিন্তু বাম আমলের (Left Front Govt) সেই নিয়োগ প্যানেল থেকে ১১ জনকে নিয়ম বহির্ভুত ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। দীর্ঘ ২৪ বছর আইনী লড়াইয়ের পর প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগপত্র পেলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এমন বঞ্চিত এমন ১১ জন চাকরীপ্রার্থী। 

আর মঙ্গলবারই তারা যোগদান করলেন স্কুলে স্কুলে। তাদের অনেকেরই যৌবন পেরিয়ে গিয়েছে। বেশীরভাগই অবসরের দোরগোড়ায়। চাকরির মেয়াদের শেষ মুহুর্তে আদালতের নির্দেশে নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে অনেকেই কেঁদে ফেলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ অফিসেই।সোমবার তাদের হাতে ফুলের তোড়া সহ নিয়োগপত্র তুলে দিয়ে মিষ্টি মুখ করান সংসদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিদর্শক। 

Latest Videos

গত বামফ্রন্ট আমলে ১৯৯৬ সালে জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে যে প্যানেল তৈরি হয়েছিল তাতে অন্যায়ভাবে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন ওই ১১ জন চাকরীপ্রার্থী। তারা এর প্রতিবাদে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। মামলা চলেছে দীর্ঘ ২৪ বছর। অবশেষে আদালতে মামলাকারিদের জয়। 

আদালতের নির্দেশ-অভিযোগকারিদের দাবি সত্য, তাই চাকরি দিতে হবে।  সেই মতো আদালতের নির্দেশে সোমবার মোট ১১ জন পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাকে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। নিয়োগপত্র পাওয়া মেনকা মুণ্ডা বিশইয়ের বয়স বর্তমানে ৫৯ বছর ৩ মাস। সরকারি নিয়মে মাত্র ৯ মাস চাকরী করবেন তিনি। কিন্তু বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়ে জয় ছিনিয়ে আনতে পারার তৃপ্তি ছিল তাদের চোখেমুখে।

সবং এর বাসিন্দা মেনকাদেবী বলেন-, "গ্রামের মানুষজন ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাকে ‘দিদিমনি’ বলে সম্বোধন করবেন এটাই সবথেকে বড় কথা। এই জয়টার জন্য দীর্ঘ লড়াই করেছি।" নিয়োগ পাওয়া অশোক কুমার গরাই বলেন, "আমরা সকলেই তফশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত। আমাদের জন্য সংরক্ষিত আসনে সাধারন প্রার্থীদের একপ্রকার জোর করে নেওয়া হয়েছিল। সেই বিষয়টি নিয়েই উচ্চ আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছিলাম। দীর্ঘ ২৪ বছর আইনী লড়াই লড়েছি। অবশেষে জয় এসেছে। নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।"

চেয়ারম্যান কিষ্ণেন্দু বিশুই বলেন- " বিগত বামফ্রন্ট সরকারের খামখেয়ালীপনার জন্যই ওই ১১ জন চাকরীপ্রার্থী বঞ্চিত থেকেছেন। তাদের সকলেরই যৌবনকাল পেরিয়ে গিয়েছে। একজন মাত্র ৯ মাস চাকরী করবেন তো বেশীরভাগই ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে অবসর নেবেন। ১১ জনের মধ্যে মাত্র একজনই সর্বাধিক ৯ বছর চাকরী করবেন। মানবিকতার দিক থেকেই তাদের বাড়ীর কাছাকাছি স্কুলে তাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।" 

দীর্ঘ আড়াই দশক ধরে লড়াইয়ের পর নিয়োগপত্র নিতে আসা চাকরীপ্রার্থীরা তাদের আনন্দাশ্রু ধরে রাখতে পারেননি অনেকেই।তবে প্রত্যেকেই মঙ্গলবারের মধ্যে যোগ দিয়েছেন নিজ নিজ বিদ্যালয়ে ৷

Share this article
click me!

Latest Videos

RG Kar কাণ্ডে আবারও একাধিক কর্মসূচির ডাক জুনিয়র ডাক্তারদের! আসন্ন মিছিলে অংশগ্রহনের আবেদন | RG Kar
মহিলাদের নিরাপত্তায় বড় উদ্যোগ! ফ্রী ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির রাজ্যজুড়ে! | RG Kar
কল্যাণী এইমসে নিয়োগ নেই স্থানীয়দের, বিজেপি সাংসদকে ঘিরে বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদেরই
'ওদের টার্গেট মহিলা আর হিন্দু' তৃণমূল বিধায়কদের উপর হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া শুভেন্দুর
মহিলাদের সুরক্ষায় ‘অভয়া প্লাস’! রাজ্যপালের ২ বছর পূর্তিতে ৯টি প্রকল্পের সুভারম্ভ | CV Anand Bose