দানের ওই জমিতে নতুন ভবন নির্মাণ করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। নাম রাখা হয়েছে “অবিনাশ স্মৃতি ভবন ”। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জমি কলেজ কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়।
কথায় বলে ঐতিহ্যের মধ্যেই বেঁচে থাকে গৌরব। আর সেই গৌরবকে বাঁচিয়ে রাখতে অভিনব পদক্ষেপ করলেন ইংরেজ আমলের কলেজের এক প্রাক্তনী। মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ আমলের শতাব্দী প্রাচীন কলেজের উন্নতির কথা ভেবে নিজের বাড়ি দান করে দিলেন শ্রীপৎ সিং কলেজের প্রাক্তন পড়ুয়া। দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই ঘটনা চাউর হতেই বেজায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
দানের ওই জমিতে নতুন ভবন নির্মাণ করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। নাম রাখা হয়েছে “অবিনাশ স্মৃতি ভবন ”। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জমি কলেজ কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়। উপস্থিত ছিলেন কলেজ অধ্যক্ষ সামসুজ্জমানান আহমেদ, জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভার প্রশাসক প্রসেঞ্জিত ঘোষ মনু, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সমীর ঘোষ ও জমির মালিক মুক্তি দত্ত। এ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ সামসুজ্জামান আহমেদ বলেন, "ওই জমি দান করার জন্য দাতা নিজেই আমার কাছে প্রস্তাব রেখেছিলেন। সেই সূত্র ধরেই কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই জমি গ্রহণ করে। বর্তমান সময়কালে এই ঘটনা দেখাই যায় না।"
আরও পড়ুন- ৭৫০০ বর্গ ফুটের তেরঙ্গায় ঢাকল ভিক্টোরিয়া, পরীর চুল ছুঁয়ে উড়ল জাতীয় পতাকা
এলাকার উচ্চ শিক্ষার প্রসারের জন্য ভাগীরথী নদীর পাড়ে মনোরম পরিবেশে ১৯৪৯ সালে নিজের বাড়িতেই কলেজ গড়ে তুলেছিলেন স্থানীয় জমিদার শ্রীপৎ সিং দুগড়। বিশাল জমিদার বাড়ির একটি অংশে কলেজ স্থাপিত হলেও বাকি অংশে জমিদারের পরিবার বসবাস করত। পরবর্তীকালে জমিদার বাড়ির একটি অংশ কিনে নেন মুক্তি দত্তের দাদা অবিনাশ চন্দ্র দত্ত। পেশায় শিক্ষক অবিনাশ অকৃতদার থাকায় তাঁর মৃত্যুর পর ওই বাড়ির মালিক হন বোন মুক্তি দত্ত। জঙ্গিপুর মহকুমার তপশিলি ও আদিবাসী দফতরের অতিরিক্ত পরিদর্শক মুক্তি দেবী নিজেও শ্রীপৎ সিং কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী। স্বাভাবিকভাবে নিজের কলেজের কলেবর বৃদ্ধি করতেই তিনি তাঁর বাড়িটি কলেজকে দান করে দেন।
আরও পড়ুন- রেড রোডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়
আরও পড়ুন- আলিমুদ্দিনে প্রথমবার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে ঐতিহাসিক ভুল CPIM-র
এই ব্যাপারে মুক্তি দত্ত বলেন, "দাদা শিক্ষানুরাগী ছিলেন। ফলে কলেজের জন্য ওই বাড়ি দান করে দেওয়ায় তাঁর আত্মা তৃপ্ত হবে বলে মনে করি। তাছাড়া দাদার স্মৃতিও রক্ষা করা গেল।" শিক্ষাবিদ সমীর ঘোষ বলেন, "একজন মানুষের শিক্ষার প্রতি যথাযথ আগ্রহ না থাকলে অত্যন্ত মূল্যবান ওই জমি দান করতেন না। সেদিক থেকে এলাকাবাসী ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।"