এ রাজ্যেও ট্রেনের ধাক্কায় বেঘোরে প্রাণ যেত পরিযায়ী শ্রমিকদের, যদি না চালক ও রেলের সেকশন ইঞ্জিনিয়ার সতর্ক থাকতেন! দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেন ২০ জন। তাঁদের উদ্ধার করেছে জিআরপি। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের নলহাটিতে।
আরও পড়ুন: পরিযায়ীদের ফেরাতে আরও ৮টি ট্রেন বরাদ্দ করল রাজ্য, প্রস্তাব আসেনি দাবি করছে রেল
বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বরহেট এলাকায়। চাষের জমিতে কাজ করার জন্য বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় এসেছেন ২০ জন আদিবাসী পরিযায়ী শ্রমিক। লকডাউনের ডেকে যথারীতি আটকে পড়েন তাঁরা। হাতে সামান্য যেটুকু টাকা ছিল, তাও শেষ হয়ে যায়। জানা গিয়েছে, নিরুপায় হয়ে দিন পাঁচেক আগে বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ রুটের রেললাইন ধরে হাঁটা শুরু করেন ওই শ্রমিকরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন তাঁরা বীরভূমের নলহাটি স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছন, তখন পিছন দিকে থেকে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে এক কামরার একটি ট্রেন! ওই ট্রেনে ছিলেন রেলের সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার সামিম আহমেদ। তিনিই প্রথম দেখতে পান, রেললাইন ধরে কয়েকজন হেঁটে যাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে চালককে হর্ন বাজানোর এবং ট্রেন থামিয়ে দিতে বলেন। এদিকে ততক্ষণে ট্রেনে আলো ও হর্নের আওয়াজে কেউ কেউ লাইন থেকে সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু চালক যদি সময়মতো ট্রেন না থামাতেন, তাহলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল।
আরও পড়ুন: বন্ধ চা বাগানে ঢুকল চিতাবাঘ, লকডাউনে আতঙ্ক ছড়াল শিলিগুড়িতে
খবর পেয়ে ভিনরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্ধার করে জিআরপি। রাতে তাঁদের খাওয়া-দাওয়া ব্যবস্থা করেন নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং। সকলেই রাখা হয় সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় শনিবার। নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও জগদীশ চন্দ্র বাড়ুই জানিয়েছেন, 'বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে বাসে করে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ওদেরকেও একইভাবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারে মারফত ঝাড়খণ্ড সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।' উল্লেখ্য. বাড়ি ফেরার পথে বৃহস্পতিবার রাতে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে ভয়াবহ কবলে পড়েন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। রাতে রেললাইনে ঘুমন্ত অবস্থায় ট্রেনে ধাক্কায় মারা যান কমপক্ষে ১৭ জন। ঠিক তেমনি ঘটনা ঘটতে পারত বীরভূমের নলহাটিতেও।