তৃণমূলের নতুন ব্লক সভাপতির উপস্থিতিতে ইফতার, হিংসা ভুলে বাগটুই গ্রামে কি ফিরছে শান্তি

ইফতারের পার্টি ঘিরে মিলন উৎসবের চেহারা নিয়েছেন গোটা গ্রাম। ইফতারের পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি।

Saborni Mitra | Published : Apr 6, 2022 2:49 PM IST

সপ্তাহ দুয়েক আগের ভয়ঙ্কর স্মৃতি কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বীরভূমের বাগটুই গ্রাম।  ইফতারের পার্টি ঘিরে মিলন উৎসবের চেহারা নিয়েছেন গোটা গ্রাম। ইফতারের পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। বর্তমানে তিনি রামপুরহাট দুই নম্বর ব্লকের সভাপতি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন তাঁরা গ্রামে শান্তি চান। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চান। ২১ মার্চের ভয়ঙ্কর স্মৃতি এখনও তাদের কাছে টাটকা। কিন্তু সেই ভয়াবহ দিনের কথা ভুলে নতুন করে তারা শুরু করতে চাইছে। 

মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে তৃণমূলের নতুন ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মিও গ্রামের মানুষের পাশে থেকে ভয়াবহ স্মৃতি মুছে ফেলতে উদ্যোগ নেন। তাই গ্রামবাসীদের আয়োজিত ইফতার পার্টিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, "প্রতি বছর গ্রামবাসীরা ইফতার পার্টির আয়োজন করে। এবার আমরা একটু বড় আকারে করার জন্য তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি দলের নির্দেশে। আমরা চাই সেদিনের ভয়াবহ স্মৃতি ভুলে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরুক বগটুই গ্রাম। সেই উদ্যোগে গ্রামের মানুষকে পাশে পেয়েছি আমরা"।

ইফতার পার্টিতে ছিলেন স্বজন হারা মিহিলাল শেখ। তিনি বলেন, "গ্রামের সমাজবিরোধীদের গ্রেফতার হয়েছে। বাকিরাও হবে। এখন গ্রাম ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। এরই মধ্যে গ্রামবাসী এবং নতুন ব্লক সভাপতি সকলকে যেভাবে এক জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন- করল সেটা প্রশংসার। এখন"। তিনি আরও বলেছেন গ্রামে শান্তি ফেরাটা জরুরি। আর সেই বার্তাই দিয়েছেন নতুন ব্লক সভাপতি। 

গ্রামের বাসিন্দা কদম রসুল শেখ বলেন, "প্রতি বছর আমরা ইফতার পার্টির আয়োজন করি। এবার গোটা গ্রামকে নিয়ে বড় আকারে করলাম। এই অনুষ্ঠান করার জন্য আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি।" আগামী দিনে তাঁর হাত ধরেই যে গ্রামে শান্তি ফিরবে সে ব্যাপারেও আশাবাদী তিনি। 

২১ মার্চ রাত্রি প্রায় সাড়ে আটটা। একের পর এক বোমায় জখম হয়ে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েন বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ। ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধরে রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে জনবহুল এলাকায় এই খুনে আতঙ্ক ছড়াই। ঘটনার ঘন্টা দুয়েক পর বদলা নিতে ভাদুর বাড়ি বগটুই গ্রামে তখন এলোপাথাড়ি বোমাবাজি ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকালে ওই সমস্ত বাড়ির ভিতর থেকেই বের হয় এক শিশু সহ নয় জনের দগ্ধ মৃতদেহ। ঘটনা সামনে আসতেই গোটা দেশ শিউরে ওঠে। আতঙ্কে গ্রাম ছাড়েন বহু মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই গ্রামকে স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এলাকায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় কর্মীদেরও গ্রামের মানুষের পাশে থাকতে নির্দেশ দেন তিনি। 

Share this article
click me!