Visva Bharati: কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরেই আকাল বসন্ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ে, আনন্দে মাতল পড়ুয়ারা

Published : Sep 08, 2021, 08:01 PM IST
Visva Bharati:  কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরেই আকাল বসন্ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ে, আনন্দে মাতল পড়ুয়ারা

সংক্ষিপ্ত

তিন ছাত্রকে বরখাস্তের ওপর অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের। খুশের মেজাজে উপাচার্যের বাড়ির সামনেই উৎসবে মাতলেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা।

আশিস মণ্ডল, বোলপুর,  করোনার জন্য গত দু-বছর শান্তিনিকেতনে হয়নি বসন্তোৎসব। এবার সেই শান্তিনিকেতনই সাক্ষী হয়েছে অকাল বসন্তোৎসবের।কলকাতা হাইকোর্টের  নির্দেশের পরই মিষ্টি হাতে উপাচার্যের বাংলো ‘পূর্বিতা’র সামনে আবির খেলায় মেতেছেন পড়ুয়ারা। রঙবেরঙের আবিরে একে অপরের মুখ রাঙিয়ে দিয়েছেন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ে থাকা পড়ুয়ারা কেউ উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন। কারও আবার দু-চোখের কোনে চিকচিক করে উঠেছে। গত ১৩ দিন ধরে চলছে নাগাড়ে অবস্থান। গত ৪ দিন ধরে ছাত্রী-অধ্যাপক চালিয়ে যাচ্ছেন রিলে অনশন। দাবি আদায়ের দাবিতে অবিচল থাকা একদল পড়ুয়া আদালতের রায়কে প্রাথমিক জয়ে বলে চিহ্নিত করেছেন।  তাঁদের মতে হাইকোর্টের এই রায়ে কিছুয়া হলেও উপাচার্য  ধাক্কা খেয়েছেন।

বুধবার আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের করা মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক রাজাশেখর মান্থা পড়ুয়াদের বহিষ্কারের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের অবিলম্বে ক্লাসে ফেরানোর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি উপাচার্যের উদ্দেশ্যে বিচারকের স্পষ্ট পর্যবেক্ষন, ‘উপাচার্য যদি নিজেকে আইনের উর্দ্ধে মনে করেন তাহলে তা ঠিক নয়।’ এদিন আদালতে পড়ুয়াদের হয়ে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবি বিকাশ ভট্টাচার্য ও শামিম আহমেদ।  আদালতের নির্দেশ ও সওয়াল জবাব প্রসঙ্গে আইনজীবি বিকাশ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘বিচারককে পরিস্কার বলেছি ছাত্রদের সাজা যদি উপাচার্য প্রত্যাহার না করেন তাহলে আন্দোলন থামানো যাবে না। এই সাজা যদি প্রত্যাহার করা হয় তবেই শান্তি ফেরাবার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। বিচারক এই বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। বিচারক এক্ষুনি পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরানোর  ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছেন।   বিচারক বলেছেন আন্দোলন প্রত্যাহার করা হোক, আদালত সব দেখবে। তাই যদি হয়, আদালত যদি সবটা দেখে তাহলে আমাদের আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই।’’ 

BRICS শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আলোচনাতেই জোর ভারতের

এর আগে প্রথম দিনের শুনানীতে আদালত আন্দোলনরত পড়ুয়াদের অবস্থান মঞ্চ সরিয়ে নিতে বলেছিল কখনই আন্দোলনের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। আর যে জন্য পড়ুয়াদের আন্দোলন এদিন সেই বহিষ্কারের উপরই স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। আগামী বুধবার ফের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

আফগানিস্তানে তালিবান সরকারকে টক্কর, সমান্তরাল সরকার গঠনের পথে পঞ্জশিরের নেতা মাসুদ

আদালতের নির্দেশের বার্তা শান্তিনিকেতনের অবস্থান মঞ্চে পৌছতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। তারা মিষ্টি হাতে পৌঁছান ‘পূ্র্বিতা’য়। উপাচার্যকে প্রতীকি মিষ্টি মুখ করাতে। স্বাভাবিকভাবেই উপাচার্যের দেখা মেলেনি। সেখানেই পড়ুয়ারা আবির খেলেন নিজেদের মধ্যে। বহিষ্কৃত পড়ুয়া সোমনাথ সৌ ও রূপা চক্রবর্তী দুজনেই এদিন জানিয়েছেন, ‘‘এটা আমাদের প্রাথমিক জয়। নায্য দাবি নিয়েই আন্দোলনে নেমেছি। আমরা কোনদিনই উপাচার্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নামিনি। কিন্তু উপাচার্যই  আমাদের পড়াশুনা থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চেয়েছেন। তাই উপাচার্যের অপসারনের দাবি থেকে আমরা সরছি না।’’ পড়ুয়াদের প্রতি বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এমন কঠোর পদক্ষেপ লঘু পাপে গুরু দন্ডের সামিল বলে উঠে এসেছে আদালতের পর্যবেক্ষনে। বহিষ্কারের উপর স্থগিতাদেশের পাশাপাশি সমস্ত রকম বিক্ষোভ অবস্থান প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার উপর জোর দিয়েছেন বিচারক। শুধু যে পড়ুয়াদের উপর আক্রমন নেমে এসেছ তা নয়, অধ্যাপক-কর্মীদের উপরও সাসপেশন সহ নানান শাস্তির খাঁড়া নামিয়ে এনেছেন উপাচার্য। তাই অধ্যাপক-কর্মীদেরও একটা অংশ প্রত্যক্ষভাবে সামিল হয়েছেন এই আন্দোলনে। অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফা’র সভাপতি তথা সাসপেন্ড থাকা অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর এই মামলায় অধ্যাপকরাও কি করে অন্তর্ভূক্ত হতে পারে সে ব্যাপারে আলোচনা সাপেক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

প্রেম বা বিয়ে, যেকোনও সম্পর্ক বাঁচাতে ভুলেও ১২টি এই জিনিস উপেক্ষা করবেন না

উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট বিশ্বভারতীর পড়ুয়া তথা এসএফআই নেতা সোমনাথ সৌ, এসএফআই নেত্রী রূপা চক্রবর্তী ও অপর ছাত্রনেতা ফাল্গুনী পানকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। গত ৯ জানুয়ারি ছাতিমতলায় এক অনুষ্ঠান চলাকালীন নির্দিষ্ট দাবিদাওয়া নিয়ে পড়ুয়াদের শান্তিপূর্ন অবস্থান বিক্ষোভকে ‘বিশ্বভারতীর সন্মানহানিকর’, ‘শৃঙ্খলাভঙ্গে’র পাশাপাশি অর্থনীতি বিভাগে ‘ভাঙচূরে’র অভিযোগ এনে তিন পড়ুয়াকে গত ১৪ জানুয়ারি সাসপেন্ড করেছিল কর্তৃপক্ষ। দু দফায় তিন মাস করে সাসপেনশনের মেয়াদ বাড়ানোর অবশেষে তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের চিঠি ধরায় কর্তৃপক্ষ। এরই প্রতিবাদে গত ২৭ আগস্ট থেকে  লাগাতার অবস্থানে নেমেছেন পড়ুয়ারা।

PREV
click me!

Recommended Stories

Gita Path 2025: ভোর থেকেই জনসমুদ্র! হাতে গীতা কপালে তিলক নিয়ে ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষ মানুষের গীতা পাঠ
অবশেষে বাবরি মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হুমায়ুনের, কী প্রতিক্রিয়া কার্তিক মহারাজের?