সময়ের ব্যবধান মাত্র এক বছর পাঁচ দিন।সুপার সাইক্লোন আম্ফান আছড়ে পড়েছিল ২০২০ সালের ২০মে। আর ঘুর্ণিঝড় যশ (Cyclone Yaas) আছড়ে পড়তে চলেছে ২৬ মে ২০২১। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বালাসোরের কাছেই ল্যান্ডফল করতে পারে ঘুর্ণিঝড় যশ (Cyclone Yaas)। তবে এখনও পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগকে হালকাভাবে নিতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবারের মত এবারও নবান্নের কন্ট্রোলরুমেই রাত কাটানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তিনি।
সুপার সাইক্লোনের চেহারা নিয়েছিল আমফান। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছিল কলকাতাতে।প্রাকৃতিক তাণ্ডবে প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল গাঙ্গেয় উপত্যকার বিস্তীর্ণ এলাকা। এই পরিস্থিতিতে সেবার নবান্নের কন্ট্রেলরুমে বসে দুচোখের পাতা এক করেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতভোর নজর রেখেছিলেন শহরের আনাচে কানাচে। করোনাবিধ্বস্ত বাংলায় আমফানের প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রথম সারিতেই দাঁড়িয়ে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। কলকাতার পাশাপাশি ঝড়েবিধ্বস্ত সুন্দরবন ও জেলাগুলির দিকেও তাঁর বিশেষ নজর ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিপর্যস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ, পানীয় জলের সরবরাহ, ত্রাণ বন্টের মত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দ্রুততার সঙ্গে নিয়েছিলেন তিনি। দিঘা উপকূলে আছড়ে পড়ার কথা ছিল আমফানের। কিন্তু গতি পরিবর্তন করে সেই সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়েছিল সারগদ্বীপে। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছিল। সেই সময় হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৮৫ কিলেমিটার।
তবে এবারও ঘুর্ণিঝড় যশ (Cyclone Yaas) নিয়ে রীতিমত উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে থেকেই কন্ট্রোলরুমে থাকবেন তিনি। রাতে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদেরও নবান্নে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনে সেনা নামানো হতে পারে রাজ্যে। ঘুর্ণিঝড় যশ (Cyclone Yaas) এর ল্যান্ডফল নিয়ে এখনও পর্যন্ত সঠিক কোনও তথ্য হাতে পারননি। তাই সকাল থেকেই নজর রাখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় গতকালই কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি।
অন্যদিকে নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই ঘুর্ণিঝড় যশ (Cyclone Yaas) মোকাবিলা করতে চলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানিয়েছেন , বুলবুল, আমফান, ফণি-মত একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। কিন্তু সেই সময় তিনি ছিলেন শাসকদলের। প্রশাসনের হয়েই তিনি কাজ করেছিলেন। পালন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ। এবার পরিস্থতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন তিনি বিরোধী শিবিরের নেতা। তবে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। নন্দীগ্রামবাসীর পাশে থেকেই তাঁদের জন্য কাজ করছেন তিনি।