জলপাইগুড়ির হড়পা বানে ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনার রাজ্য় প্রশাসনকেই দুষলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে অধীর চৌধুরী বলেন, 'বাংলার মানুষের জীবনের কোনও মূল্যই নেই। এই রাজ্যে মানুষ হড়পা বানে মরে, তড়িদাহত হয়ে মরে। চলতে চলতে মৃত্যু হয়, ড্রেনে পড়ে মরে, ডেঙ্গিতে মরে, এই বাংলার মৃত্যুতো ছেলে খেলা। আসল খেলা দিদি খেলতে জানেন। বাকি সব ছেলে খেলা।'
জলপাইগুড়ির হড়পা বানে ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনার রাজ্য় প্রশাসনকেই দুষলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে অধীর চৌধুরী বলেন, 'বাংলার মানুষের জীবনের কোনও মূল্যই নেই। এই রাজ্যে মানুষ হড়পা বানে মরে, তড়িদাহত হয়ে মরে। চলতে চলতে মৃত্যু হয়, ড্রেনে পড়ে মরে, ডেঙ্গিতে মরে, এই বাংলার মৃত্যুতো ছেলে খেলা। আসল খেলা দিদি খেলতে জানেন। বাকি সব ছেলে খেলা।' স্বাস্থ্য , শিক্ষা আর মানুষের জীবন নিয়ে এই রাজ্যে ছেলে খেলা হচ্ছে হলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর তারই পরিণাম মাল বাজারের হড়পা বানে মৃত্যু।
মাল নদীতে হড়পা বানের কারণে প্রবল জলের স্রোতে ভেসে যায় বহু মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ রাতের অন্ধকারে নদীতে এভাবে ভাষাণ দেওয়া ঠিক হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমনভাবে কোনও আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি। প্রয়োজনীয় পুলিশ আর নিরাপত্তারক্ষীও মোতায়েন ছিল না মাল নদীর তীরে ঘাটনি ঘাটে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যে সময় এই এই ঘটনা ঘটে সেই সময় মাত্র ৮ জন সিভিল ডিফেন্স কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তাদের কাছেও দঁড়ি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। ঘটনার পর পুলিশ কর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়দের কথায় মাল নদীতে হড়পা বানের কারণে প্রকাশ্যে এসেছে জলপাইগুড়ি হাসপাতালের জরাজীর্ণ দশা। কারণ আহত সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য । আবার মৃতদেহও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু মৃত ও জীবিত কোনও পরিবারই সেখানে উপযুক্ত পরিষেবা পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিন স্থানীয় বাসিন্দারা মালবাজার ক্যাললেক্স মোড়ি বিক্ষোভ দেখান।
প্রশাসন জানিয়েছেন গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত উদ্ধারকাজা চলেছে। তবে বৃষ্টির জন্য মাঝে মাঝেই ব্যাহত হয়েছে উদ্ধারকার। বিসর্জনের দিনে নিরঞ্জনের জন্য প্রায় ৭টি প্রতিমা আনা হয়েছিল মাল নদীর তীরে। কিন্তু ২০-২২টি প্রতিমা নিরঞ্জনের পরই হড়পা বান এসে লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এলাকায় যদি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও আলোর ব্যবস্থা করা হত তাহলে দুর্যোগ এত ভয়ঙ্কর আকার নিত না।
প্রাসন সূত্রের খবর নদীর একটি আইল্যান্ডে জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া প্রায় ৪০ জন আটকে রয়েছে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্ধকারের কারণে উদ্ধারকাজ কিছুটা হলেও ব্যহত হয়েছে। তাছাড়াও এখনও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে। আর সেই কারণে সমস্যায় পড়েছেন উদ্ধারকারীরা।
মূলত শুখা নদী হিসেবেই পরিচিত মাল নদী। বর্ষাকাল ছাড়া এই নদীতে বছরের অন্য সময় তেমন জল থাকে না। কিন্তু চলতি বছর উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবারও প্রবল বৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের মতে উঁচু পাহাড়ের কোথাও জল জমে ছিল। তাই প্রবল স্রোতের সঙ্গে তা আচমকাই নেমে আসে। মুহুর্তের মধ্যেই বিসর্জন বিষাদে পরিণত হয়। লন্ডভন্ড হয়ে যায় গোটা এলাকা। সজন হারা কান্না আর আতঙ্ক গ্রাস করে গোটা এলাকা।