আমফানের ধ্বংসলীলা হার মানাল আয়ালাকেও, এবার বৃষ্টি উত্তরবঙ্গে

  • আয়লার ধ্বংসলীলাকে ছাপিয়ে গেল আমফান
  • ঝড়ের গতি কলকাতা শহরে ১৩৩ কিলোমিটার
  • শেষে গতি না বাড়ালে আরও বাড়ত ধ্বংসলীলা
  • শক্তি হারিয়ে এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে আমফান

Asianet News Bangla | Published : May 21, 2020 8:50 AM IST / Updated: May 21 2020, 02:27 PM IST

পূর্বাভাস কাঁটায় কাঁটায় মিলেয় বুধবার বাংলায় তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। সুন্দরবনের কাছে বকখালিতে আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। রাতের অন্ধকারেই আঁচ পাওয়া গিয়েছিল কতটা মারাত্মক হতে চলেছে আমফানের তাণ্ডব। সকাল হতেই সামনে এল গোটা রাজ্য জুড়ে সুপার সাইক্লোনের ধ্বংসলীলা। দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে থাকে একের পর এক মৃত্যুর খবর, ক্ষয়ক্ষতির খবর। কিন্তু সবটাই খণ্ডচিত্র। নবান্ন সূত্রে জানান হয়েছে, গোটা রাজ্যের খুব অল্প অংশের ক্ষয়ক্ষতির ছবিই এখনও সামনে এসেছে। বহু এলাকাই এখনও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ নেই। টেলি যোগাযোগ ব্যাবস্থাও সম্পূর্ণ ভাবে বিপর্যস্ত।

সেই টুকরো টুকরো ছবিগুলো জোড়া লাগালে সামনে আসছে এক ভয়ঙ্কর ছবি। যার বীভৎসতা হার মানাচ্ছে আয়লার ধ্বংসলীলাকেও। দুর্যোগ ঠিক কতটা ভয়াবহ, তার প্রমাণ দিয়েছে রাতের নিকষ কালো কলকাতা। দেশের কোনও মেট্রো শহরে সাম্প্রতিক অতীতে এভাবে ধ্বংসলীলা চলেনি। 

কলকাতা শহরেই ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩৩ কিলোমিটার। ঝড়ের দাপট কমলেও বৃদুর্যোগ চলবে বলেই পূর্বাভাস। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি বাড়বে উত্তরবঙ্গে। কলকাতা-সহ দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরকে  লন্ডভন্ড করে দিয়েছে আমফান। কাঁচাবাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছ ভেঙে গিয়েছে। আমফানের  সামনে এবার ফিকে হয়ে গেল আয়লার স্মৃতি। আয়লার গতির চেয়েও থেকে ভয়ঙ্কর আকার নিল আমফান। 

উপকূলের ঢোকার মুখে বা পরে ঘূর্ণিঝড়ের নিজস্ব গতি কেমন থাকে, তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করে বিপর্যয়ের মাত্রা। ১৯৯৯ সালে ওড়িশার পারাদ্বীপে আছড়ে পড়া সুপার সাইক্লোনে ক্ষতি হয়েছিল বিপুল। মৃত্যু হয়েছিল দশ হাজার মানুষের। ক্ষতির একটা কারণ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়। অন্য একটা কারণ অবশ্যই ভুবনেশ্বর, কটক ও পারাদ্বীপের উপর ঘূর্ণিঝড়ের ৩০ ঘণ্টায় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা। তবে এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও আমফান বাঁচিয়ে দিয়েছে বাংলাকে। শেষবেলায় নিজের গতি বাড়িয়েছিল আমফান। নাহলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ত বলেই অভিমত আবহবিদদের। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়টি  দক্ষিণবঙ্গে তাণ্ডব চালিয়ে বর্তমানে শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে আপফান এখন বাংলাদেশের উপরে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সাইক্লোনের তকমা হারিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি  নিম্নচাপের আকার নিয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

আবহাবিদরা জানাচ্ছেন, নিম্নচাপে পরিণত হলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল-সহ এই রাজ্যের নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে আমফানের কারণে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি চলবে। হাওয়ার গতি থাকবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টায়। এমনকি সিকিমেও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Share this article
click me!