কোভিশিল্ডের নাম করে আদতে অ্যামিকাসিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। আজ রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে একথা জানানো হয়েছে।
ভুয়ো টিকাকাণ্ড নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। কসবার ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে যা দেওয়া হয়েছিল তা কোভিশিল্ড নয়। কোভিশিল্ডের নাম করে আদতে অ্যামিকাসিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। আজ রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে একথা জানানো হয়েছে।
কসবার ভুয়ো টিকাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে জুনের শেষের দিকে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। গ্রেফতার করা হয়েছিল ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবকে। আর তাঁকে গ্রেফতারের পরই সামনে আসে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরপর দেবাঞ্জনের অফিসে তদন্ত চালিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে কোভিশিল্ড লেবেল দেওয়া ১২০টি ভায়াল উদ্ধার করা হয়েছিল। এদিকে সেই লেবেল ওঠানোর পরই তার নিচে থেকে বেরিয়ে আসে অ্যামিকাসিন ৫০০ লেখা স্টিকার। তাতেই সন্দেহ হয়েছিল তদন্তকারীদের। কোভিশিল্ডের নাম করে দেবাঞ্জন অন্য কোনও ইঞ্জেকশন দিয়েছিল বলে অনুমান করেছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- শনিবার থেকে দু'বেলাই খুলছে কালীঘাট মন্দির, ঢোকা যাবে গর্ভগৃহে
আর সেই ভায়ালে কী ছিল তা জানতে সেই নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। প্রথমে কিছু নমুনা পাঠানো হয়েছিল পুনের সিরাম ইনস্টিটিউটকে। সেই নমুনা পরীক্ষার পর বৃহস্পতিবার ওই টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে জানানো হয় যে ভায়ালে আসলে কোভিশিল্ড ছিল না।
তারপর সেই তরল অ্যামিকাসিন কিনা তা জানার জন্য কিছু নমুনা পাঠানো হয়েছিল রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের কাছে। নমুনা পরীক্ষার পর আজ লালবাজারকে সেই রিপোর্ট দেয় রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল। সেখানে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভায়ালে ছিল অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ইঞ্জেকশন অ্যামিকাসিন। দেবাঞ্জনকে সাধারণ মানুষকে ভুয়ো টিকা দিয়েছিল তা এই রিপোর্ট আসার পর পরিষ্কার হয়ে যান তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, দেবাঞ্জন দেব ও তার সঙ্গীরা কসবায় একাধিক ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করেছিল। এ ছাড়াও আমহার্স্ট্র স্ট্রিটের সিটি কলেজেও একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। দেবাঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল একটি মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির। ওই বেসরকারি সংস্থাটির ১৭২ জন কর্মীকে ভুয়ো টিকা দিয়েছিল দেবাঞ্জন। তার পরিবর্তে ওই সংস্থার থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছিল দেবাঞ্জন দেব। এই ঘটনায় কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
আরও পড়ুন- আচমকাই সফরে বদল অভিষেকের, সোমবার বিপ্লবের রাজ্যে পা রাখবেন
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কার মাধ্যমে দেবাঞ্জনের সঙ্গে ওই সংস্থার যোগাযোগ হয়েছিল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আজ দেবাঞ্জন দেবকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। দেবাঞ্জনকে ৬ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।