মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ থাকলেও, তা মেনে চলা সম্ভব নয়। আমাদের কাছে কোন জাদুকাঠি নেই যে তা বুলিয়ে দিলেই বাঁধ তৈরি হয়ে যাবে। স্থানীয় বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তী সাফ জানিয়ে দিলেন এই কথা।
উল্লেখ্য, ২৬ জুনের মধ্যে নদী বাঁধ সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরপর দুবছর পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল ব্লকের অমৃতবেড়িয়া গ্রামে রূপণারায়ন নদীর পাড়চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথম বছর আমফান, দ্বিতীয় বছর ইয়সের কবলে পড়ে কার্যত ভাঙাচোরা দশা গোটা এলাকার নদী পাড়ের। কোনো রকমে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ বাঁধা হয়েছিলো। এক বছর পর আবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবেও একই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নদী বাঁধ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ আমফানের সময় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ এখনও সেভাবে মেরামত করা হয়নি। ফলে ২৬ জুনের মধ্যে কোনওভাবে পুরো নদীবাঁধ সারাই সম্ভব নয়। নদী বাঁধ স্থায়ীভাবে বাঁধানো না হওয়ায় সব থেকে খারাপ অবস্থা মহিষাদলের অমৃতবেড়িয়া, মায়াচরের মতো এলাকার। গ্রামের বাসিন্দারা রয়েছে আতঙ্কে। সামনেই অমাবস্যার কোটাল, ফলে আবারও প্লাবিত হতে পারে তাদের গ্রাম।
এদিকে, রবিবার রাতে কলকাতায় এসে পৌঁছলো ৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সোমবার থেকে সাইক্লোন ইয়াস ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন এই প্রতিনিধি দল। মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন সদস্যরা। সেখান থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করবেন তাঁরা।
সোমবার থেকে তিন দিনের সফরে তাঁরা ঘুরে দেখবেন দিঘা, পাথরপ্রতিমা, গোসাবা সহ ইয়স বিধ্বস্ত এলাকগুলি। সেখানে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করবেন আধিকারিকরা। সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে কেন্দ্রের হাতে। মঙ্গলবার একাধিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁদের। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করবেন তাঁরা।
রাজ্য সরকার সূত্রে খবর , পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৫টি ব্লকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে রামনগর -১/২,খেজুরি, নন্দীগ্রাম, হলদিয়া, মহিষাদল কোলাঘাট সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। জেলায় প্রায় দশ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিপর্যয় থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়সের ফলে রাজ্যের মূলত তিনটি জেলা পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।