বয়স মাত্র আট বছর। ক্যান্সার কী, তা কতখানি প্রাণঘাতী হতে পারে, সে বিষয়ে কোনও আন্দাজই নেই ছোট্ট ঋষিকার। কিন্তু রায়গঞ্জের বাসিন্দা ঋষিকা এটুকু বুঝেছে, তার দান করা চুল অসুস্থ কারও মুখে হাসি ফোটাতে পারে। আর সেটা বুঝতে পেরেই ন্যাড়া হয়েও হাসি মুখে ঘুরছে সে।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের উকিলপাড়ার বাসিন্দা ঋষিকা চক্রবর্তী স্থানীয় সারদা বিদ্যামন্দি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। বছরখানেক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের পরচুল তৈরির জন্য চুল দান করার একটি আবেদন নজরে আসে ঋষিকার বাবা- মায়ের। তার পরেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, নিজের মেয়ের চুলও দান করবেন তাঁরা। কিন্তু নিয়ম মতো চুলের দৈর্ঘ্য একফুটের বেশি হতে হবে। তাই গত এক বছরে মেয়ের চুল না কেটে তা বড় হতে দেন ঋষিকার বাবা- মা। শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার মেয়ের চুল কেটে তা প্যাকটেবন্দি করে মুম্বইয়ের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছেন কৌশিকবাবু।
আরও পড়ুন- ক্যানসারের খবরে চমকে দিয়েছিলেন সোনালি! এক বছর লড়াইয়ের পরে কেমন আছেন তিনি
প্রথমে বিষয়টি বুঝতে না পারায় ঋষিকাকে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের ছবিও দেখিয়েছিলেন কৌশিকবাবু। কেন তাঁদের পরচুল প্রয়োজন, ছোট্ট ঋষিকা তা বুঝতে পারে। তার পর আর চুল কাটা নিয়ে আপত্তি করেনি সে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঋষিকার চুল দানের খবর পোস্ট করেন ঋষিকার বাবা কৌশিক চক্রবর্তী। তাঁর দাবি ইতিমধ্যেই তা কয়েকহাজার শেয়ার হয়েছে। কৌশিকবাবু বলেন, 'ঋষিকার চুল দানের কথা জানতে পেরে আমার পরিচিত এবং অপিরিচিত অনেকেই চুল দানের কথা জানিয়েছেন। এতেই আমার সবথেকে বেশি ভাল লাগছে।'
আট বছরের মেয়ে যে মন খারাপ না করে অন্যের সমস্যাটুকু বুঝতে পেরেছে, এতেই খুশি ঋষিকার বাবা- মা। কৌশিকবাবু নিজেও চুল দান করবেন বলে ঠিক করেছেন। ঋষিকার মাও জানিয়েছেন, পরিচিতদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করবেন তিনি। আর ছোট্ট ঋষিকা বলছে, ক্যান্সার আক্রন্তদের সাহায্য করতে পেরে সে নিজে খুব খুশি।