ভাঙ্গন শুরু হতেই আশেপাশের এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতি নতুন নয়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক নজরদারি আর গাফিলতির অভিযোগে এই ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ক্রমশই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে গঙ্গার ভাঙন (Ganga Erosion)। গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে মন্দির, চাষের জমি। ভিটে মাটি হারিয়ে সর্বশান্ত মানুষগুলি বেঁচে থাকার তাগিতে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এলাকার একমাত্র মন্দিরটিও বৃহস্পতিবার তলিয়ে যায় গঙ্গার জলে। যা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্য়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠছে গাফিলতার অভিযোগ।
চোখের নিমেষেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। কার্যত মুহুর্তের মধ্যে স্মৃতিতে পরিণত হচ্ছে সবকিছু। গঙ্গার ভাঙন শীত মরশুমে ভয়াবহ চেহারা নিতে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) সংলগ্ন সামশেরগঞ্জ (Samsherganj) এলাকার বিভিন্ন অংশে।যার মধ্যে শিবপুরের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয় এই মুহূর্তে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এক পলকে গঙ্গা গর্ভে বিলীন হয়ে গেল আস্ত লক্ষ্মী মন্দির। তারপর থেকেই রাক্ষুসে গঙ্গা নতুন করে এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে। ঐ লক্ষ্মী মন্দিরটি এলাকার একমাত্র পূজার্চনার জায়গা। কিন্তু এক নিমেষে গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
ভাঙ্গন শুরু হতেই আশেপাশের এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতি নতুন নয়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক নজরদারি আর গাফিলতির অভিযোগে এই ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার ফলস্বরূপ সামশেরগঞ্জের বিস্তীর্ণ চাচান্ড ,শিবপুরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে বসেছে।
শিবপুরের দক্ষিণে গঙ্গানদী তীরবর্তী লক্ষ্মী মন্দিরের সামনে ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছিল কয়েকদিন আগে থেকেই। তবে এইভাবে মুহূর্তের মধ্যে যে ওই বিশাল আকার লক্ষ্মী মন্দির তলিয়ে যাবে তা তাঁরা বুঝতেও পারেননি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অসিত দাস বলেন, আমরা প্রতি মুহূর্তেই আতঙ্ক আর মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়েই বেঁচে আছি। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিকট আওয়াজ শুনে ছুটে এসে দেখেন, হুড়মুড়িয়ে ধস নেমে গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যায় গ্রামের একমাত্র লক্ষ্মী মন্দিরটি। তারপর থেকে গঙ্গাভাঙন আরও জোরদার হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া লক্ষ্মী মন্দিরটির আশপাশে বহু মানুষের ঘর রয়েছে। এবার যে কোনও দিন সেগুলি তলিয়ে যেতে পারে ভেবে ঘুম ছুটেছে এলাকাবাসীর। স্থানীয় গৃহবধূ অষ্টমী সিংহ বলেন, আমরা এই ভাবে দিনের পর দিন শীতের মধ্যে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। জানিনা যে কোন মুহূর্তে বাড়িঘর সবকিছু গঙ্গায় বিলীন হয়ে যেতে পারে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। না হলে এলাকায় মানুষজন আর বসবাস করতে পারবে না"।
এদিকে গ্রামের মধ্যে মন্দিরটি তলিয়ে যাওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত সেই ভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্তাদের তেমন হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ এলাকাবাসীর। তারা বলেন,আমরা ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচন করেছি এমএলএ তৈরি করেছি অথচ তিনি এ বিষয়ে নিয়ে তেমন ভাবে চিন্তিত নন। আসলে আমরা কেবল মাত্র ভোটের সময় কাজে আসি।বছরের বাকি দিনগুলোতে আমাদের কেউ খোঁজ খবর রাখে না"। এদিকে স্থানীয় তৃণমূলের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বলেন,বিষয়টা শুনেছি দেখছি প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায়"। প্রসঙ্গত , গত ৮ই ডিসেম্বর বহরমপুর এর একটি প্রশাসনিক বৈঠকের ভাঙ্গন প্রতিরোধ নিয়ে নানান কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এলাকার বিধায়কদের গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চল থেকে বসতবাড়ি গুলি সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ী কোনো প্রতিকার এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এদিকে এরপরই গঙ্গার জলস্তর নেমে যাওয়ায় পরেই সামশেরগঞ্জ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে অথচ প্রশাসনের কোনো উচ্চবাচ্য নেই।
'বাংলার বাংলাদেশ হতে দেরি নেই', বিশ্বশান্তি যজ্ঞের মঞ্চ থেকে আশঙ্কা বিজেপি নেতা শুভেন্দ অধিকারীর
হাবড়ায় 'এমে ইংলিশ চায়েওয়ালি'র নতুন দোকানে তাণ্ডব RPF-এর, নীরব রেল কর্তৃপক্ষ
কাঁকড়া খেয়ে অসুস্থ, দিঘায় ফুড সেফটি দফতের অভিযানে সামনে এল অনেক তথ্য