প্রথম পর্যায়ে ৪ ব্লকের অর্থাৎ ফরাক্কা, শামসেরগঞ্জ, সুতি ২ এবং তেঘরি এলাকায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকাকরন শুরু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বাকি এলাকাতেও টিকা এক্সপ্রেস চালু করা হবে বলে দাবি করেছেন ডিসট্রিক্ট কনসাল্টেন্ট আবসেনা খাতুন।
দ্রুত মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার সব মানুষকে করোনা টিকাকরণের (Mass Vaccination) লক্ষ্যে একটি বেসরকারি সংস্থা ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে চালু করা হল অভিনব “টিকা এক্সপ্রেস” (Tika Express)। ওই টিকা এক্সপ্রেস এখন গ্রাম বাংলায় ঘুরে ঘুরে মানুষকে টিকা দিয়ে করোনামুক্ত বাংলা গড়তে বদ্ধপরিকর। এই ব্যাপারে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন,“যাতে কোনোভাবেই কোন মানুষ টিকাকরণ থেকে বাদ না পড়েন, সেই জন্যেই এই অভিনব 'টিকা এক্সপ্রেস' চালু করা হয়েছে।
জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলায় এখনও যে সব এলাকায় স্বাস্থ্য কর্মীরা পৌঁছিয়ে মানুষকে টিকা দিতে পারেনি কিংবা অনেক মানুষ যারা ভ্যাকসিন কেন্দ্রে পৌঁছিয়ে টিকা নিতে পারেননি তাদের কথা মাথায় রেখে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও কেয়ার ইন্ডিয়ার যৌথ প্রচেষ্টায় এই টিকা এক্সপ্রেস চালু করা হল। সেক্ষেত্রে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে জেলায় মোট ১৪টি ব্লকে ওই টিকা এক্সপ্রেস কাজ করবে। এর জন্য একজন ডিসট্রিক্ট কনসালটেন্ট ও মোট ১৪ জন ভেরিফায়ার নিয়োগ করা হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে ৪ ব্লকের অর্থাৎ ফরাক্কা, শামসেরগঞ্জ, সুতি ২ এবং তেঘরি এলাকায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকাকরন শুরু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বাকি এলাকাতেও টিকা এক্সপ্রেস চালু করা হবে বলে দাবি করেছেন ডিসট্রিক্ট কনসাল্টেন্ট আবসেনা খাতুন। তিনি বলেন, “সিএমওএইচ স্যারের তদারকিতে আমরা প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে পৌঁছিয়ে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে চলেছি। স্থানীয় ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের সাহায্যে গ্রামের মানুষকে টিকা নিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।”
করোনা টিকা করনে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা। এখন পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৬০ লাখের অধিক জন মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই টিকা এক্সপ্রেস কর্মসূচির মাধ্যমে দ্রুত জেলার সব মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনা যাবে হবে বলে দাবি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। কোথাও অটো করে কিংবা মারুতি গাড়ি করে গ্রামন্তরে পৌঁছিয়ে ভেরিফায়ার টিম টিকা দিচ্ছেন সকল স্তরের মানুষকে। হাসুপুরের বাসিন্দা নব্বই ছুঁই ছুঁই পুষ্পবালা মন্ডল ঘর থেকে বেরিয়ে টিকা দিতে যেতে পারেননি।
আবার সুতি ব্লকের বাহালগঞ্জের রেনু বেওয়া কোনও ভাবেই টিকা নিতে রাজি ছিলেন না। টিকা এক্সপ্রেসের সহায়তায় তাদের মতো মানুষকেও টিকা দেওয়া সম্ভব হল। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে খুশি হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। এই প্রসঙ্গে আবসেনা খাতুনের আহ্বান “টিকা এক্সপ্রেসের সঙ্গে সবাই সহযোগিতা করে দেশ ও বাংলাকে করোনা মুক্ত করুন।”