করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এবছরের মতো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা আগেই বাতিল করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর সেই সব পড়ুয়াদের মূল্যায়ন কীভাবে করা হবে তা আজ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ঘূর্ণাবর্তের জের, আজ থেকে টানা ৩ দিন অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রাজ্যে
মাধ্যমিকের মূল্যায়নের পদ্ধতি সম্পর্কে পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, নবম শ্রেণির মার্কশিট ও দশম শ্রেণির অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। দুটি শ্রেণির ফলাফলকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে। ৫০-৫০ শতাংশ হারে ২০২১-এর মাধ্যমিকের মার্কশিট দেওয়া হবে। তবে কোনও পড়ুয়া যদি এই মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বরে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর সে পরীক্ষায় বসতে পারবে। আর পরীক্ষায় বসলে তার ফলাফলই চূড়ান্ত বলে বিবেচনা করা হবে।
অন্যদিকে উচ্চ মাধ্যমিকের মূল্যায়নের পদ্ধতি সম্পর্কে সংসদের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৯-এর মাধ্যমিকের ৪টি বিষয়ের সর্বোচ্চ নম্বরের ৪০ শতাংশ, ২০২০-র একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ৬০ শতাংশ নম্বর আর সঙ্গে দ্বাদশ শ্রেণির প্রোজেক্ট ও প্র্যাক্টিক্যালের নম্বর যুক্ত করে উচ্চ মাধ্যমিকের মূল্যায়ন করা হবে। দ্বাদশ শ্রেণি প্রোজেক্টের ২০ নম্বর, প্র্যাক্টিক্যালের ৩০ নম্বর ধরে মূল্যায়ন হবে। তবে এই মূল্যায়নের প্রাপ্ত নম্বরে যদি কোনও পড়ুয়া সন্তুষ্ট না হয় তাহলে সে পরীক্ষায় বসতে পারবে। পরিস্থিতি ঠিক হওয়ার পর পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর পরীক্ষায় বসলে তার ফলাফলই চূড়ান্ত বলে বিবেচনা করা হবে। ২৩ জুনের মধ্যে স্কুলগুলিকে পরীক্ষার নম্বর জমা দিতে বলা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে জুলাইয়ের মধ্যেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- প্রবল বর্ষণে বেহাল দশা কলকাতায়, সরব দিলীপ, ড্রেনেজ নিয়ে মুখ খুললেন ফিরহাদ
করোনা আবহে ইতিমধ্যেই একাধিক বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ুয়াদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা উচিত নয় বলে জানিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপর সেই একই পথে হাঁটে রাজ্য সরকারও। এবছরের মতো বাতিল করা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তবে সেই বিষয়ে নিজের মত পড়ুয়াদের উপর চাপিয়ে দেননি মুখ্যমন্ত্রী।
এই পরীক্ষাগুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছিলেন মমতা। এই কঠিন পরিস্থিতিতে পরীক্ষার আয়োজন সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়েছিল ওই কমিটি। এরপর পরীক্ষা হওয়া উচিত কি না তা পড়ুয়া, অভিভাবক ও আমজনতার কাছে জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে ৮৩ শতাংশ মানুষ পরীক্ষা বাতিলের পক্ষে ছিলেন বলে জানান তিনি। তারপরই পরীক্ষা বাতিল করা হয়। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, "বিশেষজ্ঞ কমিটিও বলেছে যে এই সময় পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। যেহেতু মহামারী চলছে, অনেক স্কুল সেফ হাউস হয়ে গিয়েছে। নানা রকম ব্যাপার আছে। তাই আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিচ্ছি না।" ফলে স্বাভাবিকভাবেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে ফলপ্রকাশ হবে। তবে মূল্যায়নের পদ্ধতি কি হবে তা এতদিন ঘোষণা করেননি তিনি।
অবশেষে আজ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে মাধ্যমিকের প্রায় ১৩ লক্ষ ও উচ্চ মাধ্যমিকের প্রায় ৯ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মার্কশিট কীভাবে তৈরি করা হবে সেকথা ঘোষণা করা হল।