শুক্রবার দিনভর চলে বৃষ্টি। আর এই বৃষ্টির জেরে কয়েকশো প্রতিমা ভিজে গিয়ে ভেঙে যায় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
দিনভর বৃষ্টির (Heavy Rain) জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে প্রতিমা ব্যবসায়ীরা। বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা শয়ে শয়ে সরস্বতী প্রতিমা (Hundreds of Saraswati idols) বৃষ্টিতে ভিজে ভেঙে গেল (idols got wet and broke)। মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের। মালদহ শহরের ফোয়ারা মোড়, রথবাড়ি সহ একাধিক এলাকায় রাস্তার দুই ধারে সরস্বতী প্রতিমা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎই মুষলধারে বৃষ্টি হয়। শুক্রবার দিনভর চলে বৃষ্টি। আর এই বৃষ্টির জেরে কয়েকশো প্রতিমা ভিজে গিয়ে ভেঙে যায় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন তাঁরা।
একই ছবি দেখা যায় মুর্শিদাবাদেও। সন্ধ্যার পর থেকে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুর্শিদাবাদের উত্তর থেকে দক্ষিণ তুমুল বৃষ্টি চলে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বাগদেবীর আরাধনার আগে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ থেকে শুরু করে বহরমপুর, কান্দি, ডোমকল, লালবাগ সহ একাধিক এলাকায় প্রতিমা শিল্পীরা চরম সংকটে পড়লেন। দুর্গাপুজোর পরে কয়েক মাসের ধরে খড়, মাটি, রং প্রভৃতি উপকরণের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই বায়নার বাইরে অতিরিক্ত সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করতে সাহস পাচ্ছিলেন না জেলার খ্যাতনামা প্রতিমা শিল্পীরা। সে ক্ষেত্রে কোন রকমে গত বছরের তুলনায় বেশি প্রতিমার বরাত নিয়ে নেওয়ায় শনিবার পুজোর আগে সমস্যায় পড়েছেন শিল্পীরা।
বাদ সাধছে ভিলেন বৃষ্টি। গ্রামাঞ্চলের অনেক শিল্পী বায়না না মেলায় একটি প্রতিমাও তৈরি করেননি। সব মিলিয়ে করোনার কারণে এ বছর বেশ কিছু পুজো কমিটি নিয়মরক্ষার দুর্গাপুজো সেরেছে। কাজেই দুর্গাপুজোয় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল ছোট বড় সব প্রতিমা শিল্পীকে। করোনা পরিস্থতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই সরস্বতী প্রতিমার ভালো বায়না পাওয়ার আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি সমস্ত স্কুলের তরফে আশানুরূপ সাড়াও মেলেনি। তার মধ্যেও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় কিছুটা আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল প্রতিমা শিল্পীরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তের এই পরিস্থিতির চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিল।
জিয়াগঞ্জের প্রতিমা শিল্পী সুজয় পাল বলেন, গত দশ বছর ধরে সাতটি স্কুল সহ প্রায় ১০০-১৫০ প্রতিমার বায়না থাকে। পুজোর প্রায় এক দেড় মাস আগে থেকেই বায়না হয়ে যায়। বায়নার বাইরেও ছোট ও মাঝারি মিলিয়ে আরও পঞ্চাশটি প্রতিমা তৈরি করি। পুজোর আগের দিন রাতেই সব প্রতিমা বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু এবার অবস্থা একেবারেই ভিন্ন। প্রতিমার বরাত নেয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত সেই ভাবে বিক্রি হলো না প্রাকৃতিক দুর্যোগের বৃষ্টির কারণে।আমরা খুব চিন্তায় রয়েছি কাল কি হবে সেই ভেবে"।
মন্দির প্রতিষ্ঠা প্রতিমা শিল্পী রঞ্জন সাহা বলেন, সারা বছর চাষবাস করলেও বাড়তি লাভের আশায় সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করি। বায়না ছাড়াই প্রতিমা তৈরি করলেও চিন্তা থাকে না। পুজোর দিন সকাল পর্যন্ত সব প্রতিমা বিক্রি হয়ে যায়। তবে এই বছর পরিস্থিতি আলাদা। বিক্রি হবে কি না, এই ভেবেই মাত্র দশটা প্রতিমা তৈরি করছি"।