উপত্যকায় আতঙ্কে বাংলার শ্রমিক, নবাব নগরীতে নির্বিঘ্নে কাশ্মীরি ব্য়বসায়ীরা

 

  • কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় সাগরদীঘি থানার বাহালনগরে পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে
  • বেগতিক দেখে কাশ্মীর ছেড়ে বাংলায় ফিরেছে বাঙালি শ্রমিকরা
  •  যদিও এই বাংলার মুর্শিদাবাদেই নির্বিঘ্নে রয়েছেন কাশ্মীরীরা
  • দীর্ঘদিন ধরে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করছেন নবাব নগরীতে

Asianet News Bangla | Published : Nov 13, 2019 6:38 PM IST

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় সাগরদীঘি থানার বাহালনগরে পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।  আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। বেগতিক দেখে কাশ্মীর ছেড়ে বাংলায় ফিরেছে বাঙালি শ্রমিকরা। যদিও  এই বাংলার মুর্শিদাবাদেই নির্বিঘ্নে রয়েছেন কাশ্মীরীরা। দীর্ঘদিন ধরে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করছেন নবাব নগরীতে।

বাংলা তাঁদের দ্বিতীয় মাতৃভূমি । এখানে তাঁরা নিজের মতো করে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করেন । বাপ ঠাকুরদার হাত ধরে কেউ পঞ্চাশ বছর তো কেউ তিরিশ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন শহরে শাল ,সোয়েটারের ব্যবসা করেন। জেলার লালবাগ, রঘুনাথগঞ্জ , ধুলিয়ান , বহরমপুর , বেলডাঙ্গার মতো শহরে তারা রীতিমতো দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে শাল বিক্রি করে আসছেন কয়েক শতক ধরে । যে সময় জঙ্গি হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কাশ্মীর তখন বাংলায় কাশ্মীরি ব্য়বসায়ীদের ওপর প্রতিশোধের আঁচ পড়েনি। এমনটাই জানালেন লালবাগের কাশ্মীরের বাসিন্দা সাল বিক্রেতা মহম্মদ আব্দুল লতিফ। তিনি জানান, এত বছর ধরে এখানে থাকেন , তাঁদের কোনও সমস্যা হয়নি । নিজের মতো করে চলাফেরা করেন । বরং এখানকার মানুষ তাঁদের নিজের আত্মীয়ের মতোই আপন করে নিয়েছেন। অথচ এখান থেকে কাশ্মীরে যাওয়া মানুষগুলোকে তাঁরা রক্ষা করতে পারল না , এটা তাঁদের লজ্জা ।

লতিফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় , মুর্শিদাবাদ জেলাতে অন্তত  একশো থেকে দুশো কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা আছেন । আর বাংলা জুড়ে দুই থেকে আড়াই লক্ষ কাশ্মীর থেকে সাল বিক্রি করতে আসেন । মূলত, এরা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে কাশ্মীর ছেড়ে ব্যবসার উদ্দেশ্যে পা রাখেন বাংলায়।  আবার ফিরে যান মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে । এখানকার ক্রেতাদের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষও আমাদের খুব ভাল বাসেন । পুলিশের কোনও অত্যাচার নেই রাজনৈতিক দলগুলিও চাঁদার জন্য কোনও জুলুম করে না । ফলে আমরা শান্তিতেই এখানে বাস করি । খাবার দাবার কিংবা মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্ন করেন না । ফলে নিজ মহল্লার মতোই এখানে আমরা থাকি , এখানে ব্যবসা করতে আসব না তো যাব কোথায়  , এ যে আমাদের দ্বিতীয় মাতৃভূমি স্যার। 

তবে আজও বাহাল নগরের কথা তুলতেই কেমন যেন ফ্যাঁকাসে হয়ে যায় উপত্যকার বাসিন্দা মহম্মদ আমিন বাট, এজাজ আহমেদ ,খালিদ আহমদের মুখ । বেশ লজ্জিত হয়ে মাথা নিচু করে বলেন , খুব খারাপ লাগছে । ওই ঘটনার পর  মনে হয়েছে, আমাদের মেহমানদের আমরা রক্ষা করতে পারলাম না । জানেন কাশ্মীরে যাদের মৃত্যু হয় তারাও গরিব আর এই পাঁচ জন মানুষ। যারা কাজ করতে গিয়ে মারা গেলেন তারাও গরিব । 

Share this article
click me!