প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আরও দাবি, সরকারি প্রতিষ্ঠানই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি।
ঝালদা পুরসভায় রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য হস্তক্ষেপ করুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। চিঠি লিখে এমনই দাবি করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, সমস্ত পুরবিধি-আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্বাচিত পুরপ্রধানের বদলে ঝালদা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। চিঠিতে ঝালদা পুরসভায় অচলাবস্থার জন্য সরাসরি রাজ্য সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন অধীর। তাঁর অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে। আর ঝালদা পুরসভা সেই ষড়যন্ত্রের অন্যতম নিদর্শন। প্রসঙ্গত শুক্রবার রাজ্য সরকারের পরামর্শে রাজ্যপাল ঝালদায় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জবা মাছুয়ারকে।
রবিবার এই মর্মে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। উল্লেখ্য়, ঝালদা পুরসভার পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালকে লেখা এটা তাঁর দ্বিতীয় চিঠি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আরও দাবি, সরকারি প্রতিষ্ঠানই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। তবে এই ইস্যুতে এটাই অধীরের প্রথম চিঠি নয়। সংশ্লিষ্ট পুরসভায় প্রশাসক বসানো হতে পারে এই আশঙ্কায় রাজ্যপালকে ২৩ নভেম্বর প্রথম চিঠি দিয়েছিলেন অধীর।
উল্লেখ্য, পুরভোটের পর থেকে পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ জটিল হয়ে পড়ে। ফলাফল ত্রিশঙ্কু হয়। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু বোর্ড গঠনের আগেই খুন হন। সেটা নিয়ে এখন সিবিআই তদন্ত চলছে। খুনের পিছনে রাজনৈতিক কারণ আছে বলে অনেকে মনে করেন। এই পরিস্থিতিতে ঝালদা পুরসভায় এখন দু’জন চেয়ারম্যান রয়েছেন। পুরসভার নিয়ম মেনে একজনকে বসিয়েছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। আর একজনকে নির্বাচিত করেছেন বিরোধী দলের কাউন্সিলররা। এবার এই পুরসভার ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা নিয়েই অধীরের চিঠি বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে এই পরিস্থিতিতে অধীরের দাবি বিরোধী দলের কাউন্সিলরদের নির্বাচন করা পুরপ্রধানকে গুরুত্বহীন বানিয়ে রেখে পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানেই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন যাঁকে চেয়ারপার্সন হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে তিনিই পুরপ্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। যার অর্থ দাঁড়ায়, কংগ্রেসের সভাকে সরকার বৈধতা দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসক দলের হাত থেকে গণতন্ত্রকে বাঁচানোর আবেদন নিয়ে এবার রাজ্যপালকে চিঠি লিখলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।