Buddhadeb Bhattacharjee: টাটা কারখানার স্বপ্নে কবর, বুদ্ধ বলেছিলেন 'এবার সবাই হাসাহাসি করবে!'

২০০৬ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সপ্তম বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিল্পস্থাপনে উদ্যোগী হন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব। সিঙ্গুরে টাটার গাড়ি কারখানা, নয়াচরে কেমিক্যাল হাব-সহ একাধিক কারখানা গড়তে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

উচ্চশিক্ষিত যুব সমাজের ভবিষ্যতের জন্য শিল্পের গুরুত্ব বুঝেছিলেন তিনি। চেষ্টা করেছিলেন রাজ্যে নতুন শিল্প আনার। নতুন শিল্প রাজ্যে কর্মসংস্থানের জোয়ার আনবে বলেও আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু বামফ্রন্টের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আর নিজের জীবদ্দশায় এই স্বপ্ন পূরণ হতেও দেখে যেতে পারলেন না তিনি।

২০০৬ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সপ্তম বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিল্পস্থাপনে উদ্যোগী হন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব। সিঙ্গুরে টাটার গাড়ি কারখানা, নয়াচরে কেমিক্যাল হাব-সহ একাধিক কারখানা গড়তে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। ভবিষ্যতদ্রষ্টা এই বামনেতা বুঝতেন কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু তখন রাজ্যবাসীকে বোঝাতে পারেননি তিনি।

Latest Videos

বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, শিল্পস্থাপন নিয়ে আগ্রহী থাকলেও তার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেশ কিছু ভুল করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, তাঁর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার। সিঙ্গুরের বহুফসলি জমি নিয়ে স্থানীয়দের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই সমস্যা সমাধানে দূরদর্শিতা দেখাতে পারেনি বুদ্ধদেবের প্রশাসন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, সেই পরিস্থিতিতে যে ‘ঔদ্ধত্য’ বুদ্ধদেব দেখিয়েছিলেন, তাতে হিতে বিপরীত হয়। বিরোধীদের আন্দোলনে শেষমেশ রাজ্য থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে গুজরাটে চলে যায় টাটা গোষ্ঠী। নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব নিয়েও একই পরিস্থিতি। সেখানেও একাংশ বাম নেতাদের উস্কানিমূলক কথাবার্তায় পরিস্থিতি জটিল হয়। নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েক জনের প্রাণ হারানোর অভিযোগও ওঠে। এত কিছু ঘটে গেলেও নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেননি তিনি।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময় সেই উদ্বেগ ধরা পড়েছিল তাঁর কথায়। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুদ্ধদেব বলেছিলেন, “এই রাজ্যের ছেলে-মেয়েরা কোথায় যাবে? ইনফোসিস, উইপ্রো এল না। এর মানেটা কী? আমার তো দুশ্চিন্তা হচ্ছে পাঁচ বছর পর কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। কলকারখানা নেই, বিদ্যুৎ নেই, রাস্তাঘাট নেই। সারা দেশ তো আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসবে।”

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই রাজ্যে শিল্পস্থাপনে উদ্যোগী হন তিনি। রাজ্যে শিল্প আনতে গেলে শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের থেকে দূরত্ব রাখতে চলবে না, এই বিষয়টিও বামফ্রন্টের অন্দরে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন বু্দ্ধদেব। ২০০৬ সালে বিপুল আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর টাটার ন্যানো কারখানা তৈরির ঘোষণা করেন। এর জন্য বেছে নেওয়া হয় হুগলি জেলার সিঙ্গুরকে। সিঙ্গুরের পাশাপাশি নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব তৈরির ঘোষণা করেছিলেন। এর পাশাপাশি শালবনিতে ইস্পাত কারখানা, কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগও নেয় বুদ্ধদেবের সরকার। কলকাতার উপকণ্ঠে তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্র গড়তেও প্রথম সারির অনেক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার সঙ্গেও আলোচনায় বসেছিলেন।

বুদ্ধদেবের সরকারের পতনের পর থেকেই রাজ্যে নতুন শিল্প তৈরির যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তা নিশ্চিত ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। একে একে বিভিন্ন শিল্প তৈরির গতি স্তব্ধ হতে থাকে। ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরও সেই আক্ষেপ একাধিক বার শোনা গিয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন সেই ফল আজ ভোগ করতে হচ্ছে গোটা রাজ্যকে। কার্যত আজ বুদ্ধবাবুর কথাই যেন মিলিয়ে নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

প্রয়াগে ডুব দিয়ে পবিত্র স্নান সারলেন যোগী আদিত্যনাথ | CM Yogi | Prayagraj | Mahakumbh 2025 |
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury