বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিও কমেছিল। কিন্তু, কার্টুনের থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারেননি অমল চক্রবর্তী। চোখে চশমা লাগিয়ে তিনি কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।
'অমল আলোয়' আজ আঁধার। চলে গেলেন কার্টুনিস্ট অমল চক্রবর্তী। গত সেপ্টেম্বর মাসেই ৯০ বছর পূর্ণ করেছেন অমল চক্রবর্তী। শরীর ভাল ছিল না বেশ কিছুদিন ধরেই। সম্প্রতি তিনি ভর্তি হন আর জি কর হাসপাতালে। বুধবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মূলত রাজনৈতিক কার্টুন আঁকতেন তিনি। অমৃতবাজার পত্রিকা, যুগান্তর, আনন্দবাজার পত্রিকায় কার্টুন এঁকেছেন তিনি। পরে ১৯৯২ সালে সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকেই সেখানে চাকরি করতেন অমল চক্রবর্তী। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হত তাঁর পকেট কার্টুন ‘অমল আলোয়।’
প্রায় ৭০ বছর ধরে তাঁর আঁকা কার্টুন দেখেছে বাংলার পাঠকেরা। খবরের কাগজের প্রথম পাতায় কার্টুন আঁকার যে রেওয়াজ, সেটা এই বাংলায় এসেছিল তাঁর হাত ধরেই। রাজনৈতিক কার্টুনের একটা বিশেষ দিক হল এই পকেট কার্টুন, যা খবরের কাগজের প্রথম পাতায় থাকার কথা। দীর্ঘদিন ধরে সেই পকেট কার্টুন আঁকার কাজটাই করে এসেছেন অমল চক্রবর্তী। দেশের বিখ্যাত কার্টুন শিল্পী কে শঙ্কর পিল্লাই-এর ছাত্র ছিলেন অমল চক্রবর্তী। শঙ্কর পিল্লাই তাঁকে বারবার বলতেন, ‘অমল কার্টুন আঁকতে হবে।’ সেই অনুপ্রেরণাতেই তাঁর কাজ শুরু।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিও কমেছিল। কিন্তু, কার্টুনের থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারেননি অমল চক্রবর্তী। চোখে চশমা লাগিয়ে তিনি কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। একাধিক বাংলা সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পকেট কার্টুনকে মানুষের কাছে নতুন ভাবে উপস্থাপন করেছিলেন তিনি। বিশেষ করে গ্রামবাংলাকে। তাঁর শিল্প এবং সৃষ্টিতে বছরের পর বছর সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা এবং বাঙালি। নেটপাড়ায় শোকপ্রকাশ করেছেন তাঁর ভক্তরা।
পরিবার সূত্রে খবর, কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। আচমকাই কয়েকদিন ধরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁকে তড়িঘড়ি আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চতুর্থীর দিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।