সমরেশ মজুমদারের শেষকৃত্য সম্পন্ন। এদিন তাঁকে শ্রদ্ধা জানান বহু মানুষ। তবে ছিলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিত শাহ।
একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি। তবে কালবেলার মত কালজয়ী উপন্যাসের স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার। তাঁর মৃত্যুতেই যবনিকা পতন হবে না। তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর লেখায়। পাঠকের মনে। আর পাহাড় ঘেরা তরাই ডুয়ার্সের নদী আর অলিগলিতে। সোমবার বিকেলে দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সমরেশ মজুমদার। এদিন নিমতলা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুরের বাড়িতে অনুগামীদের ঢল নামে। কালবেলার অনিমেষের স্রষ্টাকে শেষ দেখা দেখতে অনেক অনুগামীর সঙ্গে এসেছিলেন রাজ্যের রাজনৈতিক নেতারাও । কলকাতায় থাকা সত্ত্বেও সাহিত্যেক সমরেশ মজুমদারকে শ্রদ্ধা জানাতে যাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে কলকাতায় রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষ্যে উপস্থিত থাকলেও এদিন বাংলার অন্যতম লেখকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেননি বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ। তবে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির একাধিক নেতা লেখককে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। উপস্থিত ছিলেন সিপিআই (এম) র মহম্মদ সেলিম। বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারও সমরেশ মজুমদারকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশেও রয়েছে তাঁর অসংখ্য অনুগামী। সমরেশ মজুমদার আরও একবার প্রমাণ করলেন লেখকের কলম কখনও কাঁটাতারের বেড়া মানে না।
আন্দালিপিলিয়াস, বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার
বাংলাদেশের মানুষ শোক জানিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি শোক জানিয়েছেন। লেখকের জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। তাঁর প্রতিটি বই বইপ্রেমীদের কাছে ছিল অত্যান্ত প্রিয়। তরুণদের মধ্যে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। দুই বাংলার জন্য অপুরণীয় ক্ষতি। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিছেন।
মহম্মদ সেলিম, সিপিএম নেতা
সমেরশ মজুমদারের পরিবার জানিয়েছেন তাঁর দেহ নিয়ে কোনও রাজনীতি হবে না। তাঁর সেই কারণেই সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম প্রয়াত লেখকের পরিবারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সমরেশ মসুমদার সমাজ সম্পর্কে অত্যান্ত সচেতন ছিলেন। সমাজের উপযোগী লেখা তাঁর। সেলিম জানিয়েছেন, তাঁর ছাত্রবেলাতেও সমরেশ মজুমদারের লেখা পড়েছেন , অত্যান্ত পছন্দের বলেও জানিয়েছেন।
বিমান বসু, সিপিআই(এম) নেতা
সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে বাংলা সাহিত্যের অপুরণীয় ক্ষতি হল। বাস্তব ধর্মী লেখা হারিয়ে গেল। মাটির গন্ধ থাকায় ওনার বই বাংলাদেশে অত্যান্ত জনপ্রিয়।
শশী পাঁজা, তৃণমূল নেত্রী
সৃষ্টি থেকে যাবে। শ্রষ্টাকেও বাঁচিয়ে রাখা যাবে। সমরেশ মজুমদারের চিন্তাভাবনা বাঁচিয়ে রাখা যাবে বলেও মনে করেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, সমরেশ মজুমদার নিদের খ্যাতির কথা কোনও দিনই বড়াই করে জানাননি। অত্যান্ত সাধারণ মানুষের মতই থাকতেন তিনি। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গেও কথা বললেন তিনি।
শমীক ভট্টাচার্য, বিজেপি নেতা
বাঙালি সমাজকে মাটির কথা বললেন তিনি। কৈশর থেকে যৌবন সর্বত্রই লেখক সমরেশ মজুমদার ছুঁতে পেরেছিলেন। উত্তরাধিকার পড়ে অনেকেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। উত্তরবঙ্গকে দারুনভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি আরও বলেন কালবেলা আরও কয়েক দশক পরেই প্রাসঙ্গিক থাকবে। সমরেশ মজুমদার জীবনের গতিময়তাকে স্পর্শ করতেন।
ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার মেয়র
যারা সৃষ্টি করেন তারা মারা যান না। তারা চিরকাল থেকে যান। ফিরহাদ জানিয়েছেন, তাঁর লেখা শুধু বাংলাদেশ নয়, বিদেশেরও একাধিক দেশের মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে। সেই কারণেই বহু দূরের দেশের মানুষও শোকবার্তা পাঠাচ্ছেন।