CTET-র প্রতিবাদ জানিয়ে কলকাতার পথে বাংলা পক্ষ, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ভিন রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়োগের প্রতিবাদ

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সিটেট-এর প্রতিবা বাংলা পক্ষর। কলকাতারাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের পাশে নিয়ে আন্দোলন। সংগঠনের দাবি তারা বাঙালি চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে ।

 

আবারও বাংলা ও বাঙালিদের দাবিতে নিয়ে পথে নামল বাংলাপক্ষ। এবার তাদের আন্দোলনে উত্তাল কলকাতা। সংগঠনের দাবি,

যে কোন মূল্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক পদে ইউপি বিহার ঝাড়খন্ডের বহিরাগতদের ঢোকাতে চাইছে রাজ্য সরকার। তা আটকাতে সিটেট বা CTET-এর বিরুদ্ধে পথে নামল বাংলা পক্ষ। শনিবার কলকাতার রানুচ্ছায়া মঞ্চে বাংলা পক্ষর প্রতিবাদ সভায় যোগ দিয়েছিলেন দূর-দূরান্তের নানা জেলা থেকে টেট-পাশ মেধাবী বাঙালি ছাত্রছাত্রীরা। যারা দীর্ঘকাল প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের দাবিতে মাসের পর মাস আন্দোলন করেছে। সংগঠনের অভিযোগ যারা নিউজ চ্যানেলের স্টুডিওতে বসে চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষ সওয়াল করেন। কিন্তু এজাতীয় আন্দোলনে তারা উপস্থিন হয়নি।

Latest Videos

যে ব্যবস্থা কোন রাজ্যে বলেও দাবি করা করে বাংলাপক্ষ। সংগঠনের দাবি বাইরের রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক এনে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে রাজ্যের সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করা, বাংলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে এমন এক আত্মঘাতী ব্যবস্থা চালুর সামনে দাঁড়িয়ে বাংলা ও বাঙালি। বাংলার লক্ষ লক্ষ মেধাবী পশ্চিমবঙ্গ টেট পাশ ছেলেমেয়েরা যখন দীর্ঘকাল সংগ্রাম করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু করতে বাধ্য করেছে, তখন কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির এক নির্দেশ বাংলার লক্ষ লক্ষ টেট-পাশ চাকরিপ্রার্থীদের স্বপ্ন ধ্বংস করার অবস্থা সৃষ্টি করেছে। সিটেট নামক কেন্দ্রীয় পরীক্ষা, যা শুধু সেইসব রাজ্যে প্রযোজ্য, যেখানে রাজ্য টেট হয়না, সেই সিটেট পাশ করা ভারত জুড়ে লক্ষ লক্ষ বাইরের রাজ্যের মানুষকে বাংলার প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের ইন্টারভিউতে বসার অনুমতি দিয়েছেন মহামান্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর ফলে সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে উত্তর প্রদেশ-বিহার-ঝাড়খন্ড থেকে আসা লোকেরা প্রতি ঘন্টায় ৪০০র অধিক আবেদনপত্র জমা দিচ্ছে। বাংলার ভূমিপুত্রদের বঞ্চিত করে সিটেট পাশ বহিরাগতদের বাংলার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি দখল করতে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামীম, যিনি আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্যের জুনিয়র।

বাংলার টেট পাশ আন্দোলনরত মেধাবী ছেলেমেয়েরা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্যের কাছে সি-টেট আটকানোর জন্য কেস লড়তে অনুরোধ করলে বিকাশবাবু বাংলার ছেলেমেয়েদের পক্ষে এবং ইউপি-বিহারের দ্বারা বাংলার চাকরি দখলের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে অস্বীকার করেন। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদও বিনা বাক্যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই বাংলা ও বাঙালির জন্য চরম ক্ষতিকারক নির্দেশ বিনাবাক্যে মেনে নেয় ও এই কালো নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায়না। এখন টেটের বঞ্চিত ছেলেমেয়েদের পাশে সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস কেউ নেই। আছে শুধু ভারতে বাঙালির অধিকার আদায়ের জাতীয় সংগঠন বাংলাপক্ষ।

কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস্য ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস, হুগলীর জেলা সম্পাদক দর্পন ঘোষ, উত্তর চব্বিশ পরগনা শহরাঞ্চলের সম্পাদক পিন্টু রায়, হাওড়ার জেলা সম্পাদক মিঠুন মন্ডল, কলকাতার জেলা সম্পাদক অরিন্দম চ্যাটার্জী, প্রমুখ। চাকরি প্রার্থীদের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ছিলেন সাদেক বিশ্বাস, সুতপা চ্যাটার্জী, মুকুন্দ মাঝি প্রমুখ।

সভায় বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সিটেট চালু করলে বাংলার প্রাথমিক শিক্ষক পদ ইউপি-বিহার-ঝাড়খন্ড থেকে আসা লোকে ভরে যাবে। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেতে হলে এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গের ডোমিসাইল হতে হয়না বা বাংলা ভাষার কোন লিখিত পেপারের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক না। এর উপর সিটেটদের ঢুকতে দেওয়া মানে টেট-পাশ করা বাঙালি ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষক হবার স্বপ্ন শেষ করে দেওয়া এবং বাংলার শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা বহিরাগতদের হাতে তুলে দেওয়া। পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিকে সিটেট ঢোকানোর সঙ্গে জড়িত সবাই বাংলা ও বাঙালির সঙ্গে শত্রুতা করছে। বাংলা পক্ষ মেনে নেবেনা। সব দল চুপ। বাংলা পক্ষ লড়বে। বাঙালি জাতি বাংলা পক্ষর পাশে আছে।"

সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, "আজ আমাদের আন্দোলন শুরু হল। বাঙালি চাকরি প্রার্থীরা আমাদের সাথে আছে। বাঙালি সাথে আছে। অবিলম্বে CTET সংক্রান্ত নিয়ম প্রত্যাহার না করলে বড় আন্দোলন হবে। আমাদের রাজ্যের টেট দিয়েই প্রাইমারিতে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। CTET আমরা মানবো না, কোনো চাকরিপ্রার্থী মানবে না। বিহার-ইউপির একজনকেও চাকরি দেওয়া চলবে না৷ বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির বাংলা ও বাঙালি বিরোধী এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে বা সুপ্রীন কোর্টে যাক রাজ্য। নাহলে বিরাট আন্দোলন হবে।"

ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস সার্বিক আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে জোরালে আবেদন করেন৷ তিনি বাঙালি চাকরিপ্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আবেদন জানান৷ টেট আন্দোলনকারী সাদেক বিশ্বাস বলেন, "অবিলম্বে CTET প্রত্যাহার না হলে APC ভবন অভিযান হবে৷ চাকরি প্রার্থীরা বাংলা পক্ষর সাথেই আছে।"

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury