পলিগ্রাফ পরীক্ষায় মিথ্যা বলে কি পার পাবে সঞ্জয়-সন্দীপরা? কী করে বুঝবে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা

আরজি কর হাসপাতাল-কাণ্ডে প্কাত্ন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, একমাত্র ধৃত সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে চার চিকিৎসকের পলিগ্রাফ টেস্ট। সন্দীপের পরীক্ষা হচ্ছে সিজিও কমপ্লেক্সে। সঞ্জয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে প্রেসিডেন্সি জেলে

পলিগ্রাফ পরীক্ষা আগেই দিল্লি থেকে কলকাতার সিবিআই দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে এসে পৌঁছেছে সিবিআইএর কয়েকজন আধিকারিক। সূত্রের খবর তাদের উপস্থিতিতেই হবে পলিগ্রাফ টেস্ট।

পলিগ্রাফ পরীক্ষাকে লাই ডিটেক্টর পরীক্ষাও বলে থাকেন কেউ কেউ। অর্থাৎ, অভিযুক্ত মিথ্যা বলছেন কি না, তা যাচাইয়ের পরীক্ষা।

এই পরীক্ষার ফলাফল সাধারণত জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।

পরীক্ষার সময় অভিযুক্তের হার্টবিটট থেকে শুরু করে রক্তের চাপ, নাড়ির গতি সবকিছু লক্ষ্য করে হয়। অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই ধরে নেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলছে।এ এই পরীক্ষার অন্যতম শর্ত হল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সুস্থ থাকতে হবে। অসুস্থ হলে চলবে না।

পলিগ্রাফ পরীক্ষা চলার সময় কেউ যদি মিথ্যা কথা বলে তাহলে সাধারণত তার হৃৎস্পন্দনের হার দ্রুত হয়। রক্তের চাপ বেড়ে যায়। অত্যাধিক ঘাম হয়। শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। তাতেই পরীক্ষকরা বুঝতে পারেন অভিযুক্ত সত্যি বলছে না মিথ্যা বলছে।

মিথ্যা কথা বললে হৃৎস্পন্দনের হার দ্রুত হওয়া, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, অত্যধিক ঘাম হওয়া, শ্বাস নিতে সমস্যা, ত্বকে বিভিন্ন বদলের মতো নানা পরিবর্তন দেখা যায়। তার দিকে নজর দেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উত্তর দেওয়ার সময় আর প্রশ্ন শোনার সময় অভিযুক্তের শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়াগুলির একটি গ্রাফ বা লেখচিত্র ধরা পড়ে। তাতেই স্পষ্ট নয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সত্য কথা বলছে না মিথ্যা বলছে।

পলিগ্রাফ পরীক্ষা যে সর্বদাই ১০০ শতাংশ সঠিক কথা বলে তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে অপরাধ বিজ্ঞানের সঙ্গে জড়িত আর চিকিৎসকদের।

এর আগে দুটি হাইপ্রোফাইল কেসে পলিগ্রাফ পরীক্ষা হয়েছিল। একটি আরুষি হত্যাকাণ্ডে মৃতার বাবা ও মায়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা হয়েছিল। আর হয়েছেন পুনের শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ডে। পরীক্ষায় বসেছিলেন শ্রদ্ধার প্রেমিক আফতার পুনাওয়ালা।

যদিও লাই ডিটেকটর টেস্ট নিয়ে জনপ্রিয় ইংরেজি সিনেমা বেসিক ইনস্টিং। স্যারন স্টোন আর মাইকেল ডগলাসের হাড়হিম করা ছবি। যাতে পার পেয়েছিলেন নায়িকা। আর হাসিনা দিলরুমার প্রথম পার্ট। তাপসী পান্নু রীতিমত প্রস্তুতি নিয়েই বসেছিলেন পলিগ্রাফ পরীক্ষায়।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেছেন পলিগ্রাফ পরীক্ষায় মিথ্যা বললে ধরা পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই পরীক্ষা পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হয়।

এক বিশেষজ্ঞের কথায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিথ্যা বললে পার পেয়ে যেতে পারে অভিযুক্ত। যেমনটা হয়েছিল সিনেমায়। নিজের মন্তব্য অনড় থাকতে হবে।