লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে হাজার টাকা করে দেওয়া হোক মুসলিম মহিলাদেরও, তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যে অস্বস্তিতে দল

Published : Jul 28, 2023, 08:40 PM IST
Image of Humayun Kabir

সংক্ষিপ্ত

বেমক্কা পরামর্শ যে দিয়ে ফেলেছেন তিনি, তা হয়ত নিজেও বুঝেছেন প্রাক্তন এই আইপিএস। শুক্রবার খাস বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে আরও একবার বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন শাসকদলকে।

দলকে রীতিমত অস্বস্তিতে ফেললেন ডেবরার তৃণণূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুন কবীরের দাবি, 'পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম মহিলাদের অবস্থা খারাপ, তাঁরা ভীষণ আর্থিক সঙ্কটে আছেন, রাজ্যে আর্থিক সঙ্কটে থাকা মহিলাদের মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা মুসলিম মহিলাদের। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ৫০০ টাকার বদলে মুসলিম মহিলাদের হাজার টাকা করে দেওয়া হোক। এসসি-এসটি মহিলারা যে টাকা পান, সমপরিমাণ টাকা মুসলিম মহিলাদেরও দেওয়া হোক'।

তবে বেমক্কা পরামর্শ যে দিয়ে ফেলেছেন তিনি, তা হয়ত নিজেও বুঝেছেন প্রাক্তন এই আইপিএস। শুক্রবার খাস বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে আরও একবার বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন শাসকদলকে। বিধানসভা থেকে বেড়িয়ে তাই ড্যামেজ কন্ট্রোলের সুর শোনা গেল হুমায়ুন কবীরের গলায়।

হুমায়ুন গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় তৃণমূলের প্রার্থী হন। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন আর এক প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ। হুমায়ুন ভারতীকে হারান এবং মমতার তৃতীয় সরকারের মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। মেয়াদ যদিও বেশি দিন ছিল না। কিছু ব্যক্তিগত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় তাঁকে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয় বলে তৃণমূলের অন্দরে খবর।

যদিও ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে লাভ বিশেষ হয়নি। ততক্ষণে বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। দলকে না জানিয়েই এই প্রশ্ন বিধানসভায় তিনি তুলেছেন বলে সূত্রের খবর। তবে কি এই ভাবে আসলে তিনি দলকে কিছু বার্তা দিতে চাইছেন? দলের বাইরেও কি বার্তা রাখতে চাইছেন কিছু। চাইলে, কী সেই বার্তা? প্রশ্ন উঠছে এখানেই।

তৃণমূল বিধায়কের যে মন্তব্য ও ভাবনাকে নস্যাৎ করে সমালোচনা করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। 'ধর্মের ভিত্তিতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চলে না, সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পরিচালিত হয়। হুমায়ুন কবীরের উদ্দেশে মন্তব্য করেছেন নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজার। এধরনের মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, প্রতিক্রিয়া শশী পাঁজার।

কয়েকদিন আগেই, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট সন্ত্রাস নিয়ে, প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন আইপিএস অফিসার হুমায়ুন কবীর। এবার বিধানসভার অন্দরে ফের একবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মুসলিম মহিলাদের বাড়তি অর্থ দেওয়ার দাবি তুলে শাসক দলকে ফের একবার অস্বস্তিতে ফেললেন তিনি।

অনেকের মতে, অবসরের মাস চারেক আগে চাকরি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান এবং ভোটে লড়ার পিছনে তাঁর একটি রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল। মন্ত্রিত্ব পেয়ে সেই প্রত্যাশা বাড়ে। কিন্তু দ্রুতই মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়া, এবং দলের ভিতরেও তেমন গুরুত্ব না-পাওয়ায় তিনি কিছুটা হতাশ হয়ে থাকতেই পারেন। তারই বহিঃপ্রকাশ হতে পারে এই ধরনের ‘আলটপকা’ মন্তব্য।

PREV
click me!

Recommended Stories

'ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাবোই, এটা বাবরের দেশ নয়', কলকাতায় এসে হুঙ্কার ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী
Gita Path : 'মুখ্যমন্ত্রী না এসে প্রমাণ করলেন প্রকৃত হিন্দু নন' তোপ শুভেন্দু অধিকারীর