Kali Puja 2021- বর্ধমানে পূজারির সঙ্গে রাজকন্যার প্রেম সহজ ছিল না, দেবীর শক্তিতেই পূর্ণতা পেয়েছিল প্রেম

এক সময় প্রেমকে রক্ষা করেছিলেন মা কালী। বিদ্যা আর সুন্দর একে অন্যের পরিপূরক হয়েছিলেন। সেই থেকে বর্ধমান শহর সংলগ্ন দামোদর তীরে কালীমন্দির পায় বিদ্যাসুন্দরের নাম। মায়ের নির্দেশেই সেখানে বন্ধ হয়েছিল নরবলি।

Asianet News Bangla | Published : Nov 3, 2021 11:07 AM IST / Updated: Nov 03 2021, 05:03 PM IST

রাত পোহালেই কালীপুজো (Kali Puja)। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই কালীপুজো হয়ে থাকে। কয়েকটি জায়গায় আবার কালীপুজোর বয়স ৩০০, কোথাও ৫০০ তো কোথাও তারও বেশি। বহু যুগ ধরেই নিয়ম রীতি মেনেই সেই পুজোগুলি (Puja) চলে আসছে। এত বছর হয়ে যাওয়ার পরও নিয়ম রীতির ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন হয়নি। একইভাবে বর্ধমান শহর সংলগ্ন দামোদর তীরেও শুরু হয়েছিল পুজো। আর শতাব্দী প্রাচীন সেই পুজো চলে আসছে আজও।  

এক সময় প্রেমকে (Relation) রক্ষা করেছিলেন মা কালী (Devi Kali)। বিদ্যা আর সুন্দর একে অন্যের পরিপূরক হয়েছিলেন। সেই থেকে বর্ধমান শহর সংলগ্ন দামোদর তীরে কালীমন্দির (Kali Temple) পায় বিদ্যাসুন্দরের নাম। মায়ের নির্দেশেই সেখানে বন্ধ হয়েছিল নরবলি।

আরও পড়ুন- সোনার অলংকার ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীতে, স্বপ্নাদেশ মেনেই ডাকাত কালীর পুজো এই জেলায়

ঘন জঙ্গলে ঘেরা এক কালীমন্দির। আর সেখানে প্রণাম করে বিভিন্ন জায়গায় লুঠপাট করতে যেত ডাকাতরা (Dacoit)। কান পাতলে মন্দির ঘিরে শোনা যায় বিভিন্ন লোককথা। দিনের বেলায় সুন্দর নামের এক যুবক ওই মন্দিরে মা কালীর পুজো করতেন। আর তাঁর সঙ্গে রাজকন্যা বিদ্যার একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। বর্ধমান শহর সংলগ্ন দামোদরের তীরে তেজগঞ্জের জঙ্গল থেকে রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত প্রেমের পথটা একেবারেই সহজ ছিল না। আর সেই প্রণয়ের গল্পই আজকের পুজোর প্রেক্ষাপট।

আরও পড়ুন- বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র চন্ডী পাঠ করতে পৌঁছেছিলেন এই মন্দিরে

রাজকন্যা বিদ্যা খুব ভালো মালা গাঁথতেন। প্রতিদিন সেই মালা মালিনী মাসি নিয়ে যেতেন কালীর মন্দিরে। এমন সুন্দর মালা দেখে পূজারী ভাবেন যে এত সুন্দরভাবে মালা গাঁথেন, তিনি নিশ্চয় খুব সুন্দরী হবেন। আর এভাবেই শুরু হয়েছিল রাজকুমারীর সঙ্গে সুন্দরের প্রেম।

আরও পড়ুন- মহাপীঠ কিরীটেশ্বরীর টানে মুর্শিদাবাদের কালীপুজোয় ভিন রাজ্যের ভক্তদেরও ভীড়

কালী মন্দির থেকে একটি  সুড়ঙ্গ ছিল রাজদরবার পর্যন্ত। সেই সুরঙ্গ পথে সুন্দর একদিন গোপনে চলে যায় রাজকন্যা বিদ্যার কাছে। শুরু হয় গোপন প্রেমের কাহিনী। তবে রাজার চরদের  কাছে কিছুই গোপন থাকে না। সুন্দরের খবর পৌঁছে গিয়েছিল তাদের কাছে। এরপর সেই খবর পেয়ে ফাঁদ পেতেছিলেন রাজা। আর সেই ফাঁদেই ধরা পড়ে গিয়েছিলেন বিদ্যা ও সুন্দর। এরপর শাস্তি হিসেবে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, মন্দিরে বলি দেওয়ার সময় কাপালিক অজ্ঞান হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন বিদ্যা ও সুন্দর। দুই প্রেমিক প্রেমিকার নাম চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য এই কালী মন্দিরের নামকরণ বিদ্যাসুন্দর কালীমন্দির দেওয়া হয়েছিল। 

শোনা যায়, ডাকাতদের শুরু করা নরবলি দেবীর নির্দেশেই বন্ধ করে দিয়েছিলেন রাজা। তবে পুজোর আয়োজনের বাহুল্য আজও অঢেল। বিদ্যার গাঁথা মালায় হৃদয়ে মৃদুমন্দ দোলা লেগেছিল সুন্দরের। আবার প্রেয়সীর কাছে পৌঁছতে গোপনে রোম্যান্সের মালা গেঁথেছিলেন সুন্দর। আর সেই প্রেমের শক্তিকে পূর্ণতা দিয়েছিল মাতৃশক্তি। সেই শক্তির আরাধনায় মেতে ওঠে বিদ্যাসুন্দর কালীমন্দির।

Share this article
click me!