মাল বাজার হড়পা বানে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার কাজে নামলেন 'আয়রন লেডি', জানুন শান্তি রাইয়ের গল্প

Published : Oct 06, 2022, 09:18 PM ISTUpdated : Oct 06, 2022, 09:40 PM IST
মাল বাজার হড়পা বানে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার কাজে নামলেন  'আয়রন লেডি', জানুন শান্তি রাইয়ের গল্প

সংক্ষিপ্ত

বিপদগ্রস্তদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়া পাহাড়ের বিভিন্ন মহল তাকে 'জলপরী' থেকে শুরু করে 'আয়রন লেডি অফ দার্জিলিং' ইত্যাদি তকমাও দিয়েছে। তিনি তিস্তা কন্যা - বা তিস্তা কুইন শান্তি রাই। তাই মালবাজার নিয়ে নিশ্চিত হতে এবার জলে নামলেন শান্তি।

মাল নদীতে হড়পা বানের দুর্ঘটনায় যাঁরা নিখোঁজ, তাঁদের সন্ধানে জলে নামলেন তিস্তা কন্যা। চিনতে পারলেন? পারলেন না, তাহলে যদি বলে তিনি আয়রন লেডি, তবে ? এবার নিশ্চয়ই চিনবেন। তিনি শান্তি রাই।  আর কেউ নিখোঁজ হয়ে রয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত হতে জলে নামলেন তিনি। তিনি পরিচিত 'তিস্তা কন্যা' ও 'iron lady of Darjeeling' নামেই। মানুষের জীবন বাঁচিয়ে চলেছেন তিনি বছরের পর বছর। 

শান্তি কালিম্পং জেলার দশমাইলের রংপোর তারখোলা এলাকার মানগচুর স্থায়ী বাসিন্দা। রাফটিং হোক কিংবা বন্যা বা প্রবল জলস্রোত- খরস্রোতা নদীকেন্দ্রিক উদ্ধারকাজে তিনি ভগবান। সবেতেই তিনি পারদর্শী। ইতিমধ্যে বহু দুর্ঘটনাগ্রস্তদের দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তিনি প্রাণ বাঁচিয়েছেন।

পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি নদী মাল বরাবরই ভয়ঙ্কর। বুধবার সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা মধ্যে মাল নদীতে ছিল বিসর্জনের ভিড়। সেই সময়ই মাল নদীতে আসে হড়পা বান। মাল নদীতে হড়পা বান আসায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বহু মানুষ জলে পড়ে যায়। মানুষের দেহ পেতে হিমশিম খায় প্রশাসন। তাই অনেকেই শান্তির কাছে দ্বারস্থ হয়েছেন। হতাহতদের উদ্ধার থেকে নিয়ে মৃত দেহকে খুঁজে বের করার কাজে শান্তির ভূমিকা অতুলনীয়। 

ইতিমধ্যে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের একত্রিত করে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। বিপদগ্রস্তদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়া পাহাড়ের বিভিন্ন মহল তাকে 'জলপরী' থেকে শুরু করে 'আয়রন লেডি অফ দার্জিলিং' ইত্যাদি তকমাও দিয়েছে। তিনি তিস্তা কন্যা - বা তিস্তা কুইন শান্তি রাই। তাই মালবাজার নিয়ে নিশ্চিত হতে এবার জলে নামলেন শান্তি।

শান্তির বাবা প্রয়াত সুন্দর রাই, মা গৃহবধূ বৈষ্ণমায়া রাই। পাঁচ ভাই দুই বোনের বেড়ে ওঠা। পাহাড় থেকে নেমে আসা তিস্তার প্রবল জলস্রোতের সাথে শৈশব থেকেই সখ্যতা শান্তিকে এই খেতাব দিয়েছে। খরস্রোতা নদীকে বশ করা যেন তাঁর হাতের মুঠোয়। দাদা প্রবীণ রাই এবং সন্তবীর লামার কাছে রিভার ব়্যাফটিংয়ের হাতেখড়ি। শান্তির কথায়,"১৬ বছর বয়স থেকেই আমি উদ্ধার কাজের সঙ্গে যুক্ত। ২০০৫ সালে আমি সিকিমের মল্লি গিয়েছিলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম পাহাড়ের খাদের একটি গাড়ি পড়ে গেছে। শুধুমাত্র দড়ি বেঁধে উদ্ধারকাজে ঝাঁপ দিয়েছিলাম। সেবার চার জনকে উদ্ধার করতে পেরেছিলাম। তার মধ্যে একজন মহিলা ও শিশুও ছিল। মানুষকে বাঁচানোর আমাকে তৃপ্তি দিয়েছিল। তারপর থেকে এ কাজকেই আঁকড়ে ধরেছি।" 

তিনি আরও বলেন ২০০৮ সালে বিহারের সঙ্কোশ নদীতে বন্যায় অনেক মানুষকে উদ্ধার করতে অংশ নিয়েছিলাম। পরে রম্ভির তিস্তার লো ড্যাম প্রকল্পেও জলোচ্ছ্বাসে দুই শতাধিক বাসিন্দাদের উদ্ধারে হাত লাগিয়ে ছিলাম। দশমীর দিনে এই খবর আসার সাথে সাথেই আমার টিম সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা রেসকিউ কাজে হাত লাগাব। তাই আমি আমার সহযোগীদের নিয়ে এই কাজ করছি।" শান্তি এই কাজে নামায় স্বস্তি যেন প্রশাসন স্তরেও। নতুন কোনও তথ্য জল খুঁড়ে বের করে আনতে পারেন কিনা শান্তি, তা দেখার। 

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

১ বছর পরে ২ দিনের সফরে কোচবিহার যাচ্ছেন মমতা, রইল সোম ও মঙ্গলের ঠাসা কর্মসূচি
Dilip Ghosh: বাংলায় ‘বাবরি মসজিদ’! বিজেপির দিলীপ হুমায়ুনকে দিলেন চরম উপদেশ