কাটমানিতে হ্রাস টানতে দরাজ মমতা, পঞ্চায়েত স্তরে জনপ্রতিনিধিদের একলাফে ভাতা বৃদ্ধি

  • ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সদস্যদের ভাতা বৃদ্ধি
  • নবান্ন থেকে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
  • কাটমানি নেওয়ার প্রবণতায় হ্রাস টানতে উদ্যোগ
     

debamoy ghosh | Published : Jul 22, 2019 11:26 AM IST / Updated: Jul 22 2019, 05:17 PM IST

সরকারি প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে সবথেকে বেশি বিদ্ধ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সদস্যরা। এবার কাটমানি নেওয়ার প্রবণতা কমাতে জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত সব সদস্যদের ভাতা বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এ দিন নবান্নে জেলা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকের পরে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন - একুশের মঞ্চে কাটমানির ড্যামেজ কন্ট্রোল, পাল্টা ব্ল্যাক মানি আন্দোলনের নির্দেশ মমতার

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'যাঁরা পঞ্চায়েত স্তরে কাজ করেন, তাঁদের সারা দিনই কাজ করতে হয়। অনেক সময় দোষ, গুণ নিয়ে আমরা আলোচনা করি। কিন্তু ভাবিনা একটা লোক যে নিজে ভাড়া দিয়ে অফিসে যায়, তাঁদের কিছুই ছিল না। সেকথা ভেবেই এঁদের ন্যূনতম ভাতা বৃদ্ধি করা হল। আগে এঁদের কিছুই দেওয়া হতো না। আমাদের সরকার আসার পরেই এঁদের ভাতা চালু করা হয়।' 

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা এতদিন মাসিক ভাতা পেতেন ৬৬০০ টাকা করে। তা বাড়িয়ে করা হল ৯ হাজার টাকা। একইভাবে সহ সভাধিপতি এবং কর্মাধক্ষদের ভাতা বেড়ে হল যথাক্রমে মাসিক আট হাজার টাকা এবং সাত হাজার টাকা। 

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা এতদিন সাড়ে তিন হাজার টাকা করে পেতেন। তাঁরা এবার থেকে পাবেন ছয় হাজার টাকা করে। সহ সভাপতিরা পাবেন সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে। কর্মাধক্ষদের ভাতা দেড় হাজার থেকে বেড়ে হল পাঁচ হাজার টাকা।  আর সাধারণ সদস্যদের ভাতা দেড় হাজার থেকে বেড়ে হয়েছ সাড়ে তিন হাজার টাকা। 

গ্রাম সভার প্রধানরা এবার থেকে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। উপ প্রধানদের ভাতা বেড়ে হল চার হাজার টাকা। উপ সমিতির অধ্যক্ষদের ভাতা ১৮০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার টাকা। আর গ্রাম পঞ্চায়েতের সব সদস্যই এবার থেকে ১৫০০ টাকার বদলে ৩০০০ টাকা করে পাবেন। 

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জেলা পরিষদগুলিকে পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে যেকোনও একদিন দু' ঘণ্টা করে সাধারণ মানুষের অভাব, অভিযোগ শোনার জন্য জেলা পরিষদের সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মমত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভাতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের বার্ষিক ২২০ কোটি টাকা মতো খরচ বাড়ল। প্রশাসনিক কর্তাদের আশা, ভাতা বৃদ্ধির ফলে পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সরকারি প্রকল্প থেকে টাকা সরানোর প্রবণতায় বেশ কিছুটা হ্রাস টানা যাবে। 

যদিও ভাতা বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছেন বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, 'জেলা পরিষদের সদস্যদের সদস্যদের ভাতা বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শিক্ষকদের টাকা বাড়ানোর সময় সরকারের টাকা নেই। মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি আর দলের ভাঙন রুখতে চাইছেন। কিন্তু পারবেন না, তৃণমূল উঠে যাওয়ার মুখে।'
 

Share this article
click me!