বর্ধমানের কঙ্কালেশ্বরী কালিমন্দির প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার রাতে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ১০১ জোড়া পাত্রপাত্রী।
শীত পড়তে না পড়তেই বিয়ের আমোদে মেতে উঠেছে বাঙালী। শুরু হয়ে গিয়েছে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়ার পালাও। এরই মধ্যে এক বড় গণবিবাহের(Mass wedding) আসর বসল বর্ধমানে(Burdwan)। বর্ধমানের কঙ্কালেশ্বরী কালিমন্দির প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার রাতে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ১০১ জোড়া পাত্রপাত্রী। সম্ভবত এটাই পশ্চিমবঙ্গের(West Bengal) সবচেয়ে বড় গণবিবাহ। এই মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। কাউন্সিলর থাকাকালীন তিনি এটা শুরু করেন বলে যায়। এই বছর এই গণবিবাহের আসর অষ্টম বর্ষে পা দিল।
এদিন যে সমস্ত পাত্রপাত্রী গাঁটছড়া বাঁধলেন এদের মধ্যে ১৫ জন মুসলিম, ১ জন খ্রিস্টান রয়েছেন বলেও খবর। বাকিরা সবাই হিন্দু। নিজ নিজ ধর্মীয় নিয়ম মেনেই বিয়ে হয় তাদের। এদিনের বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দোপাধ্যায়। ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। ছিলেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন। ছিলেন বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সহ আরো একঝাঁক বিধায়ক।
আরও পড়ুন-বারাসাতে বড়সড় ডাকাতির ছক বানচাল পুলিশের, গ্রেফতার ৪
গণবিবাহ হলেও আয়োজনের কমতি ছিল না। সকাল থেকেই কাঞ্চননগর সহ শহরে ছিল সাজোসাজো রব। দারুণ সুন্দর করে মন্ডপ সাজানো হয়েছিল। ছিল আলোকসজ্জা আর সাউন্ড সিস্টেম।বেলা গড়াতেই টোটো চেপে হাজির হন বরসহ বরযাত্রীরা। তেমনি কনের বাড়ির লোকেরাও হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন পুরোহিত ; কাজী আর পাদ্রীরাও। যেমন তেমন করে বিয়ে কিন্তু হয়নি। আয়োজকরা দিয়েছেন সব খরচ। দেওয়া হয়েছে সোনার আংটি আর নাকছাবি। দেওয়া হয়েছে কালার টিভি, বিছানা, সাইকেল, সেলাই মেশিন থেকে আরও অনেক দান সামগ্রী।
আরও পড়ুন-বাঘের হানায় গুরুতর জখম মৎস্যজীবী, পাঠানো হল চিত্তরঞ্জন মেডিকেল কলেজে
একই সাথে পাত্রপাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বিমার পলিসি। দেওয়া হয়েছে চাল, আলু, আটা থেকে একমাসের রেশনও। এছাড়াও ছেলেপক্ষ আর কনেপক্ষের পঞ্চাশজন আত্মীয়ের ভুরিভোজের বড় ব্যবস্থাও ছিল। এদিকে গণবিবারের আসরের কারণে উৎসবের রেশ ছড়িয়ে পড়ে গোটা জেলাতেই। এমনকী আগামীতে যাতে প্রশাসনিক ভাবে এই ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয় সেই দাবিও জানিয়েছেন অনেকে। এদিকে দেশের অন্যান্য রাজ্যে গণবিবাহের চল থাকলেও বাংলার মতো গণবিবাহের আয়োজন কোনও রাজ্যেই করা হয় না, একথা মানেন অনেকেই। এদিকে অনেক দুঃস্থ পরিবার যে এতে উপকৃত হয় একথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।