সালটা ছিল ১৯৩৯। ৯ ডিসেম্বর স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রখ্যাত আইনজীবী তথা পুরুলিয়া পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান নীলকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পা রেখেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। আর সেই দিনের ইতিহাস যে আজও জ্বলজ্বল করছে বাড়ির প্রতিটি ইট, কাঠ, পাথরের গায়ে।
সারা দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose) ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী (Netaji 125th Birth Anniversary)। প্রতিবছর আজকের দিনে পুরুলিয়া (Purulia) শহরের নামোপাড়ার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতিবিজড়িত নীলকণ্ঠ নিবাসে (Nilkantha Niwas) নেতাজী জন্ম জয়ন্তী একটু অন্যরকম ভাবে পালন করা হয়।
সালটা ছিল ১৯৩৯। ৯ ডিসেম্বর স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রখ্যাত আইনজীবী তথা পুরুলিয়া পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান নীলকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায়ের (Nilkantha Chatterjee) বাড়িতে পা রেখেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। আর সেই দিনের ইতিহাস (History) যে আজও জ্বলজ্বল করছে বাড়ির প্রতিটি ইট, কাঠ, পাথরের গায়ে। আজও সেই স্মৃতি বহন করে চলেছেন এই বাড়ির সদস্যরা।
আরও পড়ুন- রাত কাটিয়েছিলেন নেতাজি, হিলির চট্টোপাধ্যায় বাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবি
৯ ডিসেম্বর এক রাতের জন্য নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর সান্নিধ্য পেয়েছিল পুরুলিয়াবাসী। ফরওয়ার্ড ব্লক (All India Forward Bloc) গঠনের পর দলের সাংগঠনিক শক্তির বিকাশ ও প্রসারের কাজে পুরুলিয়ায় গিয়েছিলেন তিনি। তখনই পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়ার বাসিন্দা প্রখ্যাত আইনজীবী এবং পুরুলিয়া পুরসভার প্রথম পুরপ্রধান নীলকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। আর নেতাজিকে (Netaji) একবার নিজের চোখে দেখার জন্য সেই বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন বহু মানুষ।
আরও পড়ুন- ১২৫ তম জন্মদিনে নেতাজিকে শ্রদ্ধা মোদীর, জাতীয় ছুটি ঘোষণার জন্য আর্জি মমতার
সারাদিন ধরে অনেক ধকল যাওয়ার ফলে ৯ ডিসেম্বর রাতে অসুস্থ (Illness) হয়ে পড়েছিলেন নেতাজি। রাতের দিকে তাঁর খুব জ্বর এসেছিল। ওই দিন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নীলকণ্ঠ নিবাসেই রাত কাটিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, বেশিদিন সেখানে তিনি থাকেননি। আসলে খুবই ব্যস্ত মানুষ ছিলেন। তাই পরদিন সকাল হতেই সামান্য কিছু জলযোগ সেরেই রওনা দিয়েছিলেন কলকাতার উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুন- ইন্ডিয়া গেটে বসছে নেতাজীর বিশাল স্ট্যাচু, কিন্তু মূর্তি তৈরির নেপথ্যে রয়েছেন কোন শিল্পী
নেতাজির জন্মবার্ষিকীতে স্মৃতি বিজড়িত পুরুলিয়া শহরের নীলকণ্ঠ নিবাসে ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী পালনের মাধ্যমে নীলকণ্ঠ নিবাস এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আগমনের ইতিহাসকে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। নীলকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয় রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায় জানান, নীলকণ্ঠ নিবাসের প্রতিটি কোণায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ইতিহাস রয়েছে। এই ইতিহাস সংরক্ষণ করার জন্য সংগ্রহশালা করা হোক। পাশাপাশি সংরক্ষণ করা হোক নীলকণ্ঠ নিবাসকেও।
এদিকে নেতাজিকে নিয়ে আজ সকালে একাধিক টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, "নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নায়ক। বাংলা থেকে নেতাজির উত্থান ভারতীয় ইতিহাসে অতুলনীয়। তিনি দেশপ্রেম, সাহসিকতা, নেতৃত্ব, ঐক্য ও সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। নেতাজি সমস্ত প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।" তিনি আরও লেখেন, "পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রোটোকল অনুসরণ করে যথাযোগ্য মর্যাদায় তাঁর জন্মদিনটিকে দেশনায়ক দিবস হিসেবে পালন করছে। নেতাজির স্মরণে কিছু দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগের মধ্যে, রাজ্যের টাকায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় জয় হিন্দ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হচ্ছে। জাতীয় পরিকল্পনা কমিশন সংক্রান্ত নেতাজির চিন্তাধারা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে, পরিকল্পনা উদ্যোগে রাজ্যকে সহযোগিতার জন্য বেঙ্গল প্ল্যানিং কমিশন গঠন করা হবে।"