ঘরে ঢুকলে বিপদ হতে পারে, পুরুলিয়ায় গাছেই হোম কোয়রান্টিনে চেন্নাই ফেরত সাত

  • ঘরে ঢুকলে বিপদে বাড়তে পারে পরিবারের
  • করোনা আতঙ্কে গাছেই ১৪ দিন আলাদা থাকা
  • এমনই সিদ্ধান্ত পুরুলিয়ার চেন্নাই ফেরত সাত যুবকের
  • ডাক্তারের নির্দেশ মেনেই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত

ঘরে ঢুকলে বিপদে বাড়তে পারে পরিবারের। করোনা আতঙ্কে গাছেই ১৪ দিন আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরুলিয়ার চেন্নাই ফেরত সাত যুবক। এরা সবাই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। ডাক্তারের নির্দেশ মেনেই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। শহরে যখন লকডাউন অমান্য় করে চলছে বেপরোয়া ঘোরাঘুরি, তখন পুরুলিয়ার ছোট্ট গ্রাম শিখিয়ে দিল-নিয়মানুবর্তিতার পাঠ। 

Latest Videos

নোবেল করোনা,লক ডাউন,হোম কোয়রান্টিন,এই শব্দগুলো বেশ কয়েকদিন ধরেই অভ্যস্ত হয়ে গেছেন শহরবাসী। কিন্তু পুরুলিয়ার ছোট্ট গ্রাম ভাঙিডির মানুষের কাছে এই শব্দগুলো সত্যিই অজানা। সেকারণে চেন্নাই ফেরত গ্রামের সাতজন যুবককে গাছের ওপর মাচা করে ১৪দিনের হোম  কোয়রান্টিনের ব্যবস্থা করল গ্রামবাসীরা। যখন প্রধানমন্ত্রীর  ২১দিনের লক ডাউন উপেক্ষা করে শহরাঞ্চলে রাস্তায় নেমেছে মানুষ, তখন ঘরের অভাবে ভাঙিডী গ্রামের মানুষ পালন করল গাছে কোয়রান্টিন। প্রশাসনের নির্দেশকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করে জঙ্গলমহল দেখিয়ে দিল, লকডাউন কীভাবে মেনে চলতে হয়। 

লকডাউনে রাস্তায় কেন দিদি, 'ভাইরা কী শিখবেন' প্রশ্ন দিলীপের.
 
পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের গেরুয়া পঞ্চায়েতের ছোট্ট গ্রাম ভাঙিডী।এই গ্রাম থেকেই সাত জন যুবক কয়েকমাস আগে কাজ করতে গিয়ে ছিল চেন্নাইয়ে।তারপর করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা কাজ ছেড়ে নিজেদের গ্রামে ফিরে আসার জন্য ট্রেন চেপে রওয়ানা দেয়।মাঝে হটাৎ করেই দেশ জুড়ে লক ডাউন হয়ে যাওয়ায় তাঁরা খড়গপুর স্টেশনে এসে আটকে পড়ে।সেখান থেকে কোনরকম করে তাঁরা গাড়ি করে গ্রামে আসেন।ভাঙিডী গ্রামের যুধিষ্ঠীর সিং লায়া জানান সাতজন যুবকের গ্রামে আসার খবর পেয়ে  গাছের ওপর মাচা করে থাকার ব্যবস্থা করি।আমরা এদের খাওয়া স্নান করা সহ অন্যান্য ব্যাবস্থা করে সবরকম সহযোগিতা করছি।

বাংলার করোনায় দিল্লির গাফিলতি,তেহট্টের আক্রান্ত নিয়ে তথ্য় দেয়নি কেন্দ্র

বিমল সিং সর্দার বলেন,গ্রামে ছোট ছোট বাড়ি। আলাদা থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই হাতি তাড়াতে গাছের ওপর যে মাচা বেঁধে থাকা হয়, সেভাবেই থাকা হবে। অন্যান্য গ্রামবাসীরা জানান ১৪ দিন আলাদা করে ঘরে রাখার ব্যবস্থা আমাদের পক্ষে মুশকিল, তাই এই গাছে রাখা ছাড়া কোনও উপাই নেই। চেন্নাই থেকে ফেরা বিজয় সিং লায়া বলেন, চেন্নাই থেকে ফিরে প্রথমে থানায় যাই।সেখান থেকে হাসপাতালে যেতে বলা হয় ১৪ দিন আলাদা থাকতে হবে। কোনও অসুবিধা হলে জানাতে বলেছেন। এর পর গ্রাম ঢোকার আগেই গ্রামবাসীরা বলেন, আমাদের জন্য আলাদা থাকার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সেই মতো আমাদের এই গাছে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।আমরা সাত জনেই সুস্থ আছি এবং বেশ ভালো ভাবেই আছি।এখানে থাকতে কোনও অসুবিধা হয়নি।আমরা এখান থেকে সকলকে বার্তা দিতে চাই,আমার যেভাবে নিয়ম পালন করছি এভাবে সকলেই যেন পালন করে। যাতে করোনা থেকে সকলেই মুক্তি পাই তাই সকলকে সচেতন করতে এভাবে রয়েছি।


 
ভাঙিডী গ্রামে গিয়ে দেখা গেল তাদের জন্য আলাদা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।রান্নার সমস্ত সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে।সেগুলো রাখা আছে গাছের নীচে। এছাড়া তাদের খাদ্য দ্রব্য বাড়ির লোকজন গাছের তলায় রেখে দিয়ে আসছেন।চেন্নাই থেকে আসা এই সাতজনেই দিনের বেলায় নীচে নেমে রান্না করে আবার গাছের উপর শুয়ে বসে দিব্যি দিন কাটাচ্ছেন। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, আমাদের এটা পুরানো প্রথা, হাতির ওপর  নজর রাখতে গাছে এভাবেই মাচা বাঁধা হয়। এবার বিপদে পড়ে  হাতির মাচাই হোম কোয়রান্টিনের কাজে লাগল। 

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury