সমাজের মূলস্রোতের ফেরানোর উদ্যোগ, ভাইফোঁটার উৎসবে সামিল শবররাও

 

  • ভারতের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনজাতি শরব
  • তাদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর কাজ করছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
  • পুরুলিয়ার পুঞ্চায় ভাইফোঁটার আনন্দে সামিল হলেন শবর বোনেরা
  • রীতি মেনে ভাইদের কপালে ফোঁটা দিল তারা

Asianet News Bangla | Published : Oct 29, 2019 11:27 AM IST / Updated: Oct 29 2019, 04:59 PM IST

অপরাধপ্রবণ জাতির তকমা ঘুচেছে। সামাজিক অবস্থানে কিন্তু বিশেষ হেরফের ঘটেনি।  শবর সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সহজভাবে মিশতে পারেন না অনেকেই। পুরুলিয়ায় পুঞ্চায় পিছিয়ে পড়া এই জনজাতির ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভাইফোঁটার আয়োজন করল পাড়ুই মানব কল্যাণ সমিতি নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। একেবারে রীতি মেনে ভাইদের কপাল ফোঁটা দিল  শবর সম্প্রদায়ের বোনেরাও।  ফোঁটা নিয়ে বোনেদের সাধ্যমতো উপহারও দিল ভাইয়েরা।

দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটা.... আক্ষরিক অর্থেই বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।  মঙ্গলবার ঘরে ঘরে  ভাইদের মঙ্গল কামনায় তাঁদের কপালে ফোঁটা দিলেন বোনেরা। চলল দেদার খাওয়া-দাওয়া, হইহুল্লোড়, উপহার-বিনিময়।  তাহলে এই উৎসব-আনন্দ থেকে কেন বাদ যাবে পিছিয়ে পড়া জনজাতির শবর সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা? তারা তো এ রাজ্যেরই বাসিন্দা! এই ভাবনা থেকেই পুরুলিয়ার পুঞ্চায় এক অভিনব ভাইফোঁটার আয়োজন করেছিলেন পাড়ুই মানব কল্যাণ সমিতি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। স্থানীয় নবদিশা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকলের সঙ্গে থালায় মিষ্টি সাজিয়ে এই প্রথমবার ভাইদের ফোঁটা দিল শরব সম্প্রদায়ের বোনেরাও। পাড়ুই মানবকল্যা সমিতির সম্পাদক অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, শরব সম্প্রদায়ের বহু ছেলেমেয়ে এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। তাদের অনেকেই যথেষ্ট মেধাবীও। কিন্তু শবর সম্প্রদায়ে ভাইফোঁটার প্রচলন নেই। বাঙালি সমাজের এই সুন্দর প্রথাটি শরবদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চান তাঁরা।

ভারতের আদিম জনজাতির সংখ্যা তো কম নয়। তবে সবচেয়ে অনুন্নত শবরবাই। পরাধীন ভারতে শবর সম্প্রদায়কে অপরাধপ্রবণ জাতি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল ব্রিটিশরা। কারণে-অকারণে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হত। এখন অবশ্য তাঁদের সেই দুর্নাম আর নেই।  তবে স্বাধীন ভারতে  শবররা যে খুব ভালো আছে, তাও বলা যায় না। বরং সমাজের মূলস্রোত থেকে দূরত্বটা রয়েই গিয়েছে। পুরুলিয়ার মতো প্রান্তিক জেলায় এখনও শবরদের এড়িয়ে চলেন বহু মানুষ। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প চালু থাকলেও, সচেতনতার অভাবে সেইসব প্রকল্পের সুযোগ-সবিধা নিতে চান না পিছিয়ে পড়া এই জনজাতির মানুষেরা। ফলে আরও বেশি করে যেন দারিদ্র্য আর অশিক্ষার অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছেন শবর। আশার কথা একটাই, পুরুলিয়ায় শবরদের উন্নয়নে কাজ করছে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।  তেমনই একটি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের উদ্যোগে ভাইফোঁটার উৎসবে সামিল হলেন শবর সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরাও।


 

Share this article
click me!