সঠিক সময়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হয়েছিল সে। কিন্তু অ্যাডমিট কার্ডের রোল নম্বর মেলাতে গিয়ে ঘটল বিপত্তি। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন থানার এএসআই। প্রথমদিন নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দিল ওই ছাত্রী। পুলিশের ভূমিকায় খুশি সকলেই।
ঘটনাটি ঠিক কী? আসানসোলের বারাবনির বালিয়াপুর হাইস্কুলের ছাত্রী আলপনা বাউরি। তার মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে বারাবনির ব্লকেরই গৌরাণ্ডি হাইস্কুলের। পরীক্ষা শুরু হতে তখন আর কয়েক মিনিট বাকি। পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট খতিয়ে দেখছিলেন শিক্ষিক-শিক্ষিকারা। জানা গিয়েছে, আলপনার অ্যাডমিট কার্ডে তার নাম, বাবার নাম, এমনকী রেজিস্ট্রেশন নম্বরও মিলে গিয়েছিল। কিন্তু রোল নম্বরটি মিলছিল না। ঘটনায় রীতিমতো বিভ্রান্তিতে পড়ে যান পরীক্ষকরাই। শেষপর্যন্ত জানা যায়, দ্বিতীয়বারের পরীক্ষার্থী বা সিসি ক্যান্ডিডেট আলপনা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলে এসেছে গতবারের অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে! এবছর মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডটি স্কুল থেকে সংগ্রহই করেনি সে। তড়িঘড়ি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে আলপনা যে স্কুলের ছাত্রী, সেই বালিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন করা হয়। কিন্তু সঠিক অ্যাডমিট কার্ডটি গৌরাণ্ডি হাইস্কুলে পৌঁছে দেবে কে? জানা গিয়েছে, বালিয়া রুটে মোবাইলে ভ্যানে ডিউটি করছিলেন খোদ বারাবনি থানার এএসআই ইমদাদুল হক। সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন তিনি। জিপে চড়ে বালিয়া হাইস্কুল থেকে অ্যাডমিট কার্ডটি নিয়ে আসেন গৌরাণ্ডি হাইস্কুলে। এরপর আর কোনও সমস্যা হয়নি। নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দেয় আলপনা।
আরও পড়ুন: পড়াশোনায় ভাল হওয়ায় ঈর্ষা, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কান কাটল দুই ভাই
গৌরাণ্ডি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'অ্যাডমিট কার্ডটি দেখে প্রথমে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেই সমস্যাটি বুঝতে পারি। কিন্তু যাতে পরীক্ষার আগে টেনশনে পড়ে না যায়, তাই তাকে কিছু জানানো হয়নি। সঠিক সময়ে অ্যাডমিট কার্ড চলে আসায় আর কোনও সমস্যা হয়নি।' আর যাকে নিয়ে এতকাণ্ড, সেই আলপনা বাউরি কী বলছে? ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বক্তব্য, 'ভুল অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে এসেছি, প্রথমে তা বুঝতেই পারিনি। স্কুল থেকে যে নতুন অ্যাডমিট কার্ড তুলতে হবে, তাও জানতাম না!' মঙ্গলবার আসানসোল ও দুর্গাপুরে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছাও জানান পুলিশকর্তারা।