ইন্টারভিউ দিয়েও মেলেনি চাকরী, মানসিক অবসাদে গ্র্যাজুয়েট প্রশান্তর পা এখন ভারী শিকলে বাধা

পার্শ্ব শিক্ষক সহ বহু ইন্টারভিউ দিয়েও মেলেনি চাকরী,  মানসিক অবসাদে গ্র্যাজুয়েট প্রশান্তর পা এখন ভারী শিকলে বাধা।  বছর পাঁচেক ধরে শিকলের বাঁধনে বন্দী বাঁকুড়ার সিমলাপালের প্রশান্ত মান্ডির জীবন। 
 

শিকল বাঁধা জীবন কাটছে জঙ্গলমহলের প্রশান্ত মান্ডির। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে শিকল বাঁধা জীবন কাটছে জঙ্গলমহলের সিমলাপালের শালবনী গ্রামের এক যুবকের। পড়াশুনা করেও মেলেনি চাকরি।  দিনের পর দিন বেকারত্বের যন্ত্রনার ছোবল সয়ে সয়ে মানসিক অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে সে।  মানসিক ভারসাম্যহীনতার অসুস্থ শরীর এখন শিকল বন্দী।  বছর পাঁচেক ধরে শিকলের বাঁধনে বন্দী বাঁকুড়ার সিমলাপালের প্রশান্ত মান্ডির জীবন। 

আরও পড়ুন, 'কাশ্মীর' নয়, এই প্রথম 'শিক্ষক নিয়োগ' ইস্যু, হিজবুল মুজাহিদিনের হুমকি সিডি আদৌ কতটা সত্যি

Latest Videos

 বাঁকুড়ার জঙ্গল মহলের সিমলাপাল থানার শালবনী গ্রামের মেধাবী যুবক বছর ২৬ বয়সের প্রশান্ত মান্ডি। দিন মজুরের উপার্জন থেকেই চলে তাদের সংসার। বাবা মায়ের  কষ্টের উপার্জন থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তোলার স্বপ্ন দেখেছিল প্রশান্ত। চাকরি পেয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন ছিল তার দুচোখে। স্থানীয় পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্ম্মু মহাবিদ্যালয়ে থেকে স্নাতক পাশের পর চেষ্টা শুরু চাকরীর।  বিভিন্ন ভাবে চাকরির জন্য ছুটে বেড়িয়েছে সে। ২০১৬ সালে পার্শ্ব শিক্ষকের নিয়োগের ইন্টারভিউ দিয়ে বাড়ি ফিরেই এক অন্য প্রশান্ত দেখতে পান বাড়ির লোকজন। কখনও নিজের বিভিন্ন শংসাপত্র পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা আবার কখন বিড় বিড় করে নিজের মনে বকবক করা। আবার কখন নিশ্চুপ হয়ে থাকা। এমন নানান পরিবর্তন লক্ষ করেন তার পরিবার। 

আরও পড়ুন, JMB প্রধান ঘুরতে আসে ধৃতের বারাসাতের বাড়িতেই, রাহুলের উত্তর শুনে অবাক গোয়েন্দারা


 ছেলের এমন অবস্থা দেখে তাঁর চিকিৎসা করাতে দিনমজুর পরিবারটি হন্যে হয়ে ছুটে বেড়িয়েছে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তেমন ভাবে চিকিৎসা করাতেও পারেননি তার পরিবার। ছেলেকে কিভাবে সুস্থ করবেন তা নিয়ে চিন্তার ঘুম ছুটেছিল পরিবারের।  কিন্তু তেমন ফল মেলেনি। টাকা পয়সা শেষ হয়ে যাওয়ায় একসময় চিকিৎসাতেও ইতি টানতে বাধ্য হয় পরিবার। এরপর থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন প্রশান্ত মাঝে মাঝেই ছুটে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে। দুই সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে প্রশান্ত।  দিন মজুর পরিবারে কে আগলে রাখবে প্রশান্তকে।  বাবা মা না খাটতে গেলে পেট চলবে কিভাবে তাই কাজে যাবার সময় শিকল দিয়ে বেধে দিত ছেলে প্রশান্তকে।  ছেলে যাতে পালিয়ে যেতে না পারে তাই শিকল দিয়ে বেঁধে কাজে যেতেন তার বাবা মা।

আরও পড়ুন, 'কর্ম করো-ফলের ব্যাপারে ভেবো না', রাজ্যপালের দিল্লি সফর ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

 ছেলের এমন অবস্থা চোখের সামনে দিনের পর দিন দেখতে দেখতে দুশ্চিন্তায় কয়েক মাস আগে মারা যায় প্রশান্তর বাবা। প্রশান্তর দাদা কাজের খোঁজে চলে যায় দূরে।  পেটের দায়ে মাকে অন্যের জমিতে এখন জনমজুরির কাজ করতে হয়। সে কাজে মা চলে গেলে শালবনীর ভগ্নপ্রায় ত্রিপলের তাপ্পি দেওয়া একচিলতে কুঁড়ে ঘরে বন্দীদশায় কাটে উচ্চ শিক্ষিত প্রশান্তর জীবন। যে ছেলেকে অতিকষ্টে খাইয়ে পরিয়ে পড়াশোনা করিয়ে বড় করে তুলেছিলেন মা সেই প্রশান্তকে এভাবে একা বাড়িতে  শিকলে বেঁধে রেখে কাজে যেতে মন চায়না মা ভারতী মান্ডির। কিন্তু উপায়ও তো নেই।   গত পাঁচটা বছর এভাবেই কেটে গেছে প্রশান্তর। আরো কত বছর কে জানে। স্থানীয় তৃণমুল বিধায়ক ঘটনার কথা শুনে আশ্বাস দিয়েছেন সরকারি ভাবে প্রশান্তর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার। শেষ পর্যন্ত প্রশান্ত কি কোনওদিন ফিরে পাবে তার সুস্থ স্বাভাবিক শৃঙ্খলমুক্ত জীবন সেটায় এখন দেখার। 
 

Share this article
click me!

Latest Videos

'উনি চক্রান্তের বড় শিকার' নেতাজির জন্মদিনে এ কী বললেন মমতা? Mamata on Netaji
রাগের মাথায় এ কী করে বসলো স্বামী! দেখলে আঁতকে উঠবেন, চাঞ্চল্য Nadia-এ | North 4 Parganas News Today
সুকান্ত মজুমদারকে বিজেপির নবজাতক আখ্যা কুণালের, পাল্টা দিয়ে যা বললেন সুকান্ত : Sukanta on Kunal
নেতাজির 'মৃত্যুদিন' ঘোষণা রাহুলের, ক্ষোভ উগরে একহাত নিলেন সুকান্ত মজুমদার | Sukanta on Rahul
ED Raid Today: Kolkata-র একাধিক স্থানে ফের ED-র অভিযান! Salt Lake-এ হাজির বিশাল ইডির দল | Kolkata