সরকারি নির্দেশিকা না মেনেই স্কুল খুলল বজবজের নোদাখালিতে। চলছে পরীক্ষা। শুধু তাই নয়, রীতিমত নির্দেশিকা জারি করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এশিয়ানেট নিউজ বাংলা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অকপটে স্বীকার করল আইন অমান্যের কথা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই করোনা আবহে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
বজবজের নোদাখালির বিড়লামোড়ের ওই স্কুলটির নাম মিম অ্য়াকাডেমি। নার্সারি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করে ছাত্রছাত্রীরা। করোনা আবহের মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণি অর্থাৎ কচিকাচাদের নিয়ে স্কুলের মধ্য়ে বসে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে করেছে কর্তৃপক্ষ। বাড়ি থেকে স্কুলের পোশাক সহ নানাবিধ জিনিসপত্র আনতে বলা হয় অভিভাবকদের। শুধু তাই নয়, স্কুলের মধ্য়ে খুদেদের নিয়ে জামায়েত করা হয়। অভিভাবকরা তাঁদের শিশুদের সঙ্গে করে জমায়েত করে স্কুলের মধ্যে। অভিজ্ঞমহলের প্রশ্ন, করোনা আহহে স্বাস্থ্য বিধি কোথায়? রাজ্য সরকার যখন নির্দেশিকা দিয়েছে, তাহলে কেন মানা হল না বিপর্যয় মোকাবিলা আইন?
আরও পড়ুন-যত্রতত্র পড়ে গুলির খোল, বাড়িতে ভাঙচুর, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হাসনাবাদ
বেসরকারি স্কুল মিম অ্য়াকাডেমির পর্যবেক্ষক এবং শিক্ষক ওয়েদুর আনসারি জানান, ''আমরা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি, স্কুলটি গ্রামের দিকে হওয়ায় অনলাইনে পরীক্ষার ব্যবস্থা সেভাবে নেই, ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার পরই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তবে এটা মানছি যে রাজ্য সরকারের লকডাউনের নির্দেশিকা অমান্য করছি আমরা, সেটা সম্পূর্ণ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে''
প্রাক্তন বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে ১ সেপ্টেম্বর পূর্ণ দিবস ছুটি ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। অথচ, সেদিনই পরীক্ষার ব্যবস্থা করে ওই বেসরকারি স্কুল মিম অ্য়াকাডেমি। এদিন সকাল ১০টা থেকে বাংলা, ইংরেজি পরীক্ষার ব্যবস্থা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য বিধি মানতে কিছু নির্দেশিকাও জারি করেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন-ডাকাতির উদ্দেশ্য়ে জড়ো হওয়া ৬ দুষ্কৃতী গ্রেফতার, ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার ধারাল অস্ত্র
এবিষয়ে মিম অ্যাকাডেমির শিক্ষক ওয়েদুর আনসারির যুক্তি, '' আশেপাশের সমস্ত বেসরকারি অফিস খোলা থাকায় আমরা স্কুলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি, স্কুল খোলার অনুমতি আমাদের কেউ দেয়নি, আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি''। পাশাপাশি, তিনি আরও জানান, আপনারা আমাদের স্কুলের ক্ষতি করতে চাইছেন, তাই আমাদের বিরুদ্ধে খবর করছেন। মন্তব্য শিক্ষক ওয়েদুর আনসারির।
অন্যদিকে, মিম অ্য়াকাডেমি নামে ওই স্কুলের সরকারি অনুমোদিত কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, যদি সরকার অনুমোদিত স্কুল হত, তাহলে কেন সরকারের নির্দেশিকা অমান্য করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ? করোনা সংক্রমণ রুখতে যখন রাজ্য সরকার সাপ্তাহিক লকডাউন করছে। সব সরকারি স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে, তাহলে কেন স্কুলের মধ্য়ে পরীক্ষা ব্যবস্থা করা হল? বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকেই। মিম অ্যাকাডেমি নামে ওই বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে উপযুক্ত ,পদক্ষেপ করার দাবি তুলেছে বিশিষ্টমহল।