বুদ্ধদেব পাত্র: মঙ্গলবার রাত বারোটা থেকে দেশজুড়ে লকআউট ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর থেকে কোনও বেসরকারি সংস্থাও তাদের কারখানা খুলে রাখতে সাহস পায়নি। ব্য়তিক্রম, কিছু দুধ, পাউরুটি বা খাবারদাবারের মতো জরুরি কিছু পণ্য় উৎপাদন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে যা দেখা গেল, তা দেখে সম্ভবত বিস্মিত হবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও। পুরুলিয়ার আদ্রায়, রেলের ওয়ার্কশপে কিন্তু গাদাগাদি করে কাজ করে চলেছেন শ্রমিকরা!
প্রধানমন্ত্রী লকআউট ঘোষণা করার পরেরদিন, অর্থাৎ বুধবার রেলের দক্ষিণ-পূর্ব শাখার আদ্রা ডিভিশনে গিয়ে দেখা গেল, গাদাগাদি করে পুরোদস্তুর কাজ চলছে সেখানে। এমননি, করোনা যখন অতিমারী হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র, সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য় কোনও মাস্ক বা স্য়ানিটাইজারের ন্য়ূনতম বন্দোবস্তটুকুও করা হয়নি। শুধু ওয়ার্কশপই নয়, একসঙ্গে অনেককে মিলে রেলের লাইন মেরামতিও করতে দেখা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, করোনার প্রকোপে যখন নজিরবিহীনভাবে ভারতীয় রেলের ইতিহাসে এই প্রথম যখন এতদিন বন্ধ থাকছে ট্রেন পরিষেবা, তখন রেলের ওয়ার্কশপে বা লাইন মেরামতি করতে কেন গাদাগাদি করে কাজ করছেন এতজন শ্রমিক!
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়নগুলি। এদিন কারখানায় গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বেশ বোঝা গেল, তাঁরা নিরুপায়। খোদ প্রধানমন্ত্রী যেখানে দেশজুড়ে ২১ দিনের জন্য় লকডাউন ঘোষণা করেছেন, রেলের চাকা যেখানে স্তব্ধ রয়েছে দেশজুড়ে, সেখানে তাঁরা কার্যত বাধ্য় হয়েই কাজে আসছেন। স্য়ানিটাইজার নেই, মাস্ক
ও নেই। তাই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য় মুখে রুমাল বেঁধে নিয়ে খানিকক্ষণ অন্তর অন্তর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিচ্ছেন কর্মরত শ্রমিকরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে কী করে রেলের ওয়ার্কশপে কাজ চলছে? ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অভিষেক কুমার নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে বললেন, "ওপর থেকে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি কাজ বন্ধ করার।" অন্য়দিকে রেলের বড়়কর্তারা বিষয়টি নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন। পরেরদিনও কারখানায় গিয়ে দেখা গেল সেই একই ছবি। গাদাগাদি করে কাজ করছেন শ্রমিকরা। অন্য়দিকে গ্য়াংম্য়ানরাও লাইন মেরামতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঘেঁষাঘেঁষি করে!