লকডাউনের বাজারে এবার রামনবমীর দিন বিজেপি বিধায়করা যেখানে আর হোমযজ্ঞের ধারপাশে ঘেঁষছেন না, সেখানে একা কুম্ভ হয়ে এগিয়ে এলেন এক তৃণমূল বিধায়ক। বৃহস্পতিবার শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য জলেশ্বর শিবমন্দিরে রীতিমতো যজ্ঞ করলেন। তারপর বললেন, " এই পরিস্থিতিতে শান্তিপুরবাসী আর পশ্চিমবাংলার মা মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যাতে ভালো থাকেন এবার সেই প্রার্থনা করলাম।"
এদিকে এই খবর জানাজানি হতেই শান্তিপুরে শুরু হয়ে যায় তুমুল শোরগোল। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এই নিয়ে একেবারেই মুখ খুলতে চাননি। কংগ্রেসের তরফেও কেউ কিছু বলতে চাননি। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে শান্তিপুর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে জিতেছিলেন অরিন্দমবাবু। কিন্তু বছর ঘুরতে-না-ঘুরতেই তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। যদিও খাতায় কলমে এখনও কংগ্রেসেই নাকি রয়ে গিয়েছেন তিনি। এদিকে এখন তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে তিনি নাকি গেরুয়া শিবিরে ঘেঁষছেন বলে কানুঘুঁষো শোনা যাচ্ছে। আবার এ-ও শোনা যাচ্ছে, এমন দলবদলু নেতাকে দলে ভেড়াতে রাজি নন জেলার বিজেপি নেতৃত্বও।
বৃহস্পতিবার রামনবমীর দিন জলেশ্বর শিবমন্দিরে যজ্ঞ সেরে বেরিয়ে অরিন্দমবাবু সাংবাদিকদের বলেন, "প্রত্য়েকবছরেই এই দিন আমি ঈশ্বরের কাছে নিজের ও নিজের পরিবারে জন্য় প্রার্থনা করি। কিন্তু এইবারের প্রার্থনাটা সমগ্র শান্তিপুরবাসী ও পশ্চিমবাংলার মা মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের জন্য়। "
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, করোনার ভয়ে যেখানে তাঁর দলনেত্রী বিজ্ঞানের ওপর ভরসা করছেন, তখন তিনি রামনবমীর দিন হোমযজ্ঞ করতে গেলেন কেন? যদিও নাম না-করে কেউ কেউ বলছেন, মনেপ্রাণে গেরুয়াপন্থী এই নেতা প্রতিবারই রামনবমীর দিন যাগযজ্ঞ করেন। এবারেও করেছেন, ঠিক আছে। কিন্তু যজ্ঞ করে ওঠার পর ওইসব করোনার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কথা না-ই বলতে পারতেন। কারণ, রাজ্য়ের ২৯৪ জন বিধায়কের ভেতরে একজনকেও এখনও পর্যন্ত করোনার জন্য় যাগযজ্ঞ করতে দেখা যায়নি কিন্তু। এমনকি গেরুয়াপন্থীদেরও নয়। উনি তো নিজের নাক কাটলেনই , সেইসঙ্গে দলের নাকও কাটলেন।