মালদার মানিকচকের গঙ্গায়, বিহারে ভাসিয়ে দেওয়া করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ রাজ্যে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আশঙ্কা থেকে জেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে রাজ্য সরকার। যার জেরে ইতিমধ্যেই গঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় নৌকায় চলছে কড়া নজরদারি প্রশাসনের। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন মৃতদেহের সন্ধান মেলেনি।
কিন্তু বিহারের মৃতদেহ গঙ্গায় ভেসে আসা গুজবে প্রবলভাবে সংক্রমিত মালদার মানিকচক ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার মানুষের জনজীবন।
ইতিমধ্যেই স্থানীয় একটি ক্লাব, এবং ভূতনির হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে, গঙ্গায় স্নান করা, এই জল ব্যবহার না করার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। শনিবার মানিকচকের একটি ক্লাব, গঙ্গার জল ব্যবহার বা পান না করা, রান্নায় ব্যবহার না করতে, এমনকি রান্না করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করে। এই নিয়েই যথেষ্ট আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে মালদার মানিকচক সহ সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায়।
যদিও এ ব্যাপারে মানিকচকের বিডিও জয় আমেদ জানিয়েছেন, 'সরকারিভাবে এই প্রচারের কোন নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি।' হীরা নন্দ পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাজল মন্ডল ও জানান, 'এই প্রচারের ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই। পঞ্চায়েতের নাম করে কেউ বা কারা এই ধরনের প্রচার করছে। আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।'
যদিও ততক্ষণে এই গুজব সংক্রমিত করেছে মানিকচক সহ সংলগ্ন বেশকিছু গ্রামের জনজীবনকে। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
এই এলাকার একটা বড় অংশের মানুষের পেশা মাছ বিক্রি। এই গুজবের ফলে বিপাকে পড়েছেন তারা। ক্রেতারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না মাছ কিনতে। ফলে বাজারেই পড়ে থাকছে মাছ। আর যেটুকু বিক্রি হচ্ছে, তা বাজার দামের থেকে অনেক কম রেটে। অন্যান্য দিনে যে মাছের বাজার দর ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা প্রতি কেজি থাকে, সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০৯ টাকায়। অন্য সময় যে গঙ্গার রুই-কাতলা বিক্রি হয়,৬০০ থেকে ৮০০ টাকা প্রতি কিলো দরে, সেই মাছের বাজার দর এখন গুজবের জেরে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা প্রতি কেজি।
এ ব্যাপারে মানিকচকের বিডিও এবং পুলিশের তরফে কোনরকম গুজবে আতঙ্ক ছড়াতে নিষেধ করা হয়েছে। কোন গুজব আতঙ্ক ছড়ালে প্রয়োজনীয় আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়েছে।